• বাড়তি পার্কিং ফি আদায়ের অভিযোগ জানাতে অ্যাপ তৈরির নির্দেশ মেয়রের
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেআইনিভাবে অতিরিক্ত পার্কিং ফি আদায় এবং অবৈধ পার্কিং নিয়ে অভিযোগ ভূরি ভূরি। শহরজুড়ে পুরসভার নির্দেশিত পার্কিং ফি কোথাও নেওয়া হয় না বলেই অভিযোগ। উল্টে দ্বিগুণ বা তিনগুণ ফি চাওয়া হয়। সম্প্রতি এই মর্মে অভিযোগ জানিয়ে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পার্কিং নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য একটি অ্যাপ চালুর নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পার্কিং লটের সামনে পুরসভার নির্ধারিত পার্কিং ফি-এর হার জানিয়ে বোর্ড টাঙাতে বলেছেন তিনি। যদিও এসবের পরেও পার্কিং নিয়ে অভিযোগ মিটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে পুরসভার অন্দরেই। 

    সম্প্রতি ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, অনেক জায়গাতেই বাইকের জন্য ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত পার্কিং ফি নেওয়া হচ্ছে। কোনও স্লিপও দেওয়া হচ্ছে না। চাইতে গেলে অভব্য ব্যবহার করছেন পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। বিষয়টি শুনে সংশ্লিষ্ট পার্কিং বিভাগের অফিসারকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মেয়র।

    পার্কিং নিয়ে এমন সমস্যা শহরে প্রচুর। পার্ক স্ট্রিটের মতো এলাকায় গাড়ির জন্য ঘণ্টাপিছু ১০০ টাকা নেওয়ারও অভিযোগ শোনা যায়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র পুরসভার অতিরিক্ত কমিশনারকে পার্কিং নিয়ে অভিযোগ জানাতে একটি অ্যাপ তৈরি করতে বলেন। ফিরহাদ হাকিম জানান, ফি জানিয়ে বোর্ড লাগানো এবং অভিযোগ জানাতে একটি অ্যাপ তৈরি করতে বলা হয়েছে। পার্কিং মাফিয়াদের থাকতে দেব না। 

    যদিও আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, এ ধরনের অ্যাপ ইতিমধ্যেই পুলিসের একটি রয়েছে। তাতে বিশেষ সুরাহা হয় না আমজনতার। যদিও পার্কিং ফি বাড়ালে এই ধরনের সমস্যার সমাধান সম্ভব ছিল বলেই মনে করে পুরকর্তাদের একাংশ। এই কারণে কয়েক বছর আগে পার্কিং ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব হয়েছিল। নির্দেশিকাও জারি হয়। কিন্তু নবান্নের  চাপে সেই নির্দেশিকা তুলে নেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে মেয়রের আফশোস, পার্কিংয়ে বেআইনিভাবে মানুষের থেকে প্রচুর টাকা তোলা হচ্ছে। কেউ অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে, এই খাতে প্রচুর রাজস্ব আদায়ের সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে।

    পুরকর্তারা বলেন, পার্কিং ফি-এর পরিকাঠামো পুনর্বিন্যাস করে নতুন করে চালু করা গেলে এই ‘দুর্নীতি’ নিয়ন্ত্রণ করা যেত। প্রায় ১৫ বছরের পুরনো কাঠামো চলছে। এদিকে, যারা পার্কিং লটগুলি থেকে ফি আদায়ের দায়িত্বে রয়েছে, সেই সমস্ত সংস্থা একতরফা মানুষের থেকে বেআইনিভাবে প্রচুর টাকা আদায় করছে। পিছনে স্থানীয় ‘রাজনৈতিক দাদা’দের মদতও রয়েছে। এক্ষেত্রে পার্কিং ফি বাড়ানো গেলে এবং গোটা ব্যবস্থায় প্রযুক্তি নির্ভরতা বাড়িয়ে কড়াকড়ি শুরু করলে এই ধরনের অভিযোগ অনেকটাই কমানো যেত।
  • Link to this news (বর্তমান)