আর জি কর নিয়ে নবান্ন অভিযান ঘিরে তুঙ্গে প্রস্তুতি, একা না হতে নির্দেশ বাহিনীকে
আনন্দবাজার | ০৮ আগস্ট ২০২৫
বিক্ষোভকারীদের সামলাতে গিয়ে পুলিশকর্মীদের কেউ যাতে একা হয়ে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে বাহিনীর আধিকারিকদের নির্দেশ দিল লালবাজার। কাল, শনিবার আর জি কর-কাণ্ডের এক বছর উপলক্ষে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের ডাকে নবান্ন অভিযানকে সমর্থন করছে বিরোধী দল বিজেপি। সে দিন কালীঘাট অভিযানের ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশও। পুলিশের আশঙ্কা, অভিযান গত বারের মতো ফের মারমুখী হয়ে উঠতে পারে। তাই লালবাজার বাহিনীর সদস্যদের একসঙ্গে থেকে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ছাত্র সমাজ নামে একটি সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযানে বাবুঘাটের কাছে এক পুলিশকর্মীকে একা পেয়ে মারধর করে বিক্ষোভকারীরা। বছর দুয়েক আগেও বিজেপির অভিযানে একা থাকা এক এসি এবং ইনস্পেক্টরকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, নবান্ন অভিযান ঠেকাতে শহরের চার জায়গায় (এ জে সি বসু রোডে টার্ফ ভিউয়ের সামনে, হেস্টিংস মোড়, খিদিরপুর ১১ ফার্লং গেট এবং হাওড়া সেতু) বসছে স্টিলের ব্যারিকেড, কন্টেনার, জলকামান। এ ছাড়া মোট ১৯টি জায়গায় ব্যারিকেড হবে। বিদ্যাসাগর সেতুর মুখেও থাকছে ব্যারিকেড, পুলিশ বাহিনী। তবে কখন থেকে ওই রাস্তা বন্ধ হবে, তা এখনও স্থির হয়নি। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, বিদ্যাসাগর সেতুর আশপাশে যেখানে ব্যারিকেড হচ্ছে, সেখানে দায়িত্বে থাকবেন একাধিক অতিরিক্ত নগরপাল, যুগ্ম নগরপাল, সহকারী নগরপাল এবং তাঁদের বাহিনী। হাওড়া সেতুতে থাকবেন এক জন করে অতিরিক্ত নগরপাল ও যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার অফিসার। ইতিমধ্যে তাঁরা ওই সব জায়গা পরিদর্শনও করেছেন।
হাওড়াতেও বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে বসছে ১০ ফুট উঁচু গার্ডরেল, মোতায়েন হচ্ছেন প্রায় ৪২ জন আইপিএস অফিসার। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন আইজি, ডিআইজি পদমর্যাদার একাধিক অফিসার। ইতিমধ্যে গোয়েন্দা দফতর বিশাল জমায়েত হতে পারে বলে জানিয়েছে। এ নিয়ে বুধবার হাওড়া পুলিশ লাইনে রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তারা বৈঠক করেন। হাওড়া পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়ায় দু’টি নবান্নমুখী মিছিলের একটি আসবে গোলাবাড়ি থেকে হাওড়া স্টেশন হয়ে, ক্যাব রোড দিয়ে বঙ্কিম সেতু ছুঁয়ে হাওড়া ময়দান রুটে। অপরটি আসবে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে সাঁতরাগাছি সেতু রুটে। এ জন্য সাঁতরাগাছি সেতুর আগে গ্যারেজ মোড়ে ১০ ফুট উঁচু গার্ডরেল ও সিসি ক্যামেরা বসছে। হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে থাকবে দু’টি জলকামান, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স, রোবোকপ-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। হাওড়া স্টেশন থেকে ময়দানের দিকে আসা মিছিল আটকাতে জিটি রোডে থাকছে উঁচু ব্যারিকেড, জলকামান। ব্যারিকেড করা হবে নবান্নের কাছে মন্দিরতলা, কাজিপাড়া, ফোরশোর রোডের সন্ধ্যাবাজার মোড়েও। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই দিনের মিছিল নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। মামলার রায়ের উপরে অনেক কিছু নির্ভর করলেও আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।’’ তিনি আরও জানান, ওই দিন সকাল ১০টার পর থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, জিটি রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
বিকেলে চিকিৎসক সংগঠনের কালীঘাট অভিযানকে কেন্দ্র করে চার জায়গায় (হাজরা মোড়, হাজরা রোড, হরিশ মুখার্জি রোড এবং আলিপুর মিউজিয়ামের সামনের রাস্তা) ব্যারিকেড করছে পুলিশ। কালীঘাট অভিযান ঠেকাতে বাহিনীর পুরো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দু’জন অতিরিক্ত নগরপালকে।