স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সকলকে বয়সে ছাড় দেওয়া যাবে না! তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও রয়েছে। সেই কথাও মামলাকারীদের জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এসএসসি। কিন্তু তাতে বেশ কিছু আপত্তি তুলে কলকাতা হাই কোর্টে যান চাকরিপ্রার্থীরা। তবে হাই কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এসএসসি-র বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। এটা সত্য যে, কমিশন এবং পর্ষদই বর্তমান অচলাবস্থার জন্য দায়ী। কিন্তু দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করা এখন লক্ষ্য। না হলে আগামী দিনে আরও জটিলতা তৈরি হতে পারে। কমিশনের নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না আদালত।
হাই কোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানায়, চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলার রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, যে কেউ বয়সে ছাড় চেয়ে আবেদন করতে পারেন না। তবে ‘মানবিকতার কারণে’ সোমা রায়ের চাকরি বহাল রাখা হয়েছি। ওই ধরনের কোনও চাকরিপ্রার্থীকে বয়সে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। সবাইকে নয়।
মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, ২০১৬ সালের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ২০১৬ সালের মতোই হওয়া উচিত। ২০২৫ সালের নিয়ম অনুযায়ী ২০১৬ সালের নিয়োগ হতে পারে না। বয়সে ছাড়, শূন্যপদের সংখ্যা বৃদ্ধি, নম্বর সংক্রান্ত একাধিক নিয়মে আপত্তি তোলা হয়েছিল কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই আপত্তি গ্রাহ্য করল না। যদিও ব্যতিক্রম পরিস্থিতিতে বয়সের ছাড় দেওয়ার বিষয়টি ভাবনাচিন্তা করা হতে পারে।
গত এপ্রিলে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি যায় ২৫ হাজার ৭৫২ জনের, ব্যতিক্রম ছিলেন শুধু ক্যানসার আক্রান্ত শিক্ষক সোমা। সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছিল, ‘মানবিক কারণে’ সোমার নিয়োগ বাতিল করা হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, এসএসসি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বার বার এসেছিলেন সোমা। মামলাকারীদের থেকেই সোমার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ। সব শুনে রাজ্য সরকারের কাছে তিনি ‘অনুরোধ’ করেছিলেন যাতে সোমাকে চাকরি দেওয়া হয়। ২০২২ সালে সেই ‘অনুরোধ’ মেনে ক্যানসার আক্রান্ত সোমাকে চাকরির সুপারিশপত্র দেয় কমিশন। বীরভূমের নলহাটি-১ ব্লকের মধুরা হাই স্কুলে বাংলার শিক্ষক হিসাবে সোমাকে নিয়োগ করা হয়। এখনও সেই পদে রয়েছেন তিনি।