এজলাসে প্রণয় এলেন স্ট্রেচারে, ট্যাংরা-কাণ্ডে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন
আনন্দবাজার | ০৮ আগস্ট ২০২৫
পা জখম থাকায় দাদা প্রণয় দে-কে জেল থেকে আদালতে আনা হয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্সে। তার পরে এজলাসে নিয়ে আসা হয় স্ট্রেচারে বসিয়ে। এর কিছু ক্ষণ আগেই এজলাসে নিয়ে আসা হয়েছিল প্রণয়ের ভাই প্রসূন দে-কে। ট্যাংরায় একই পরিবারের তিন জনকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার শিয়ালদহের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে চার্জ গঠন করা হল।পায়ে চোট থাকা প্রণয়কে এজলাসে হাজির করানোর আগে তাঁকে আনার ক্ষেত্রে অব্যবস্থার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারক।
দে পরিবারের তিন জন, দুই ভাইয়ের দুই স্ত্রী এবং প্রসূনের কিশোরী কন্যাকে খুনের অভিযোগে প্রণয় ও প্রসূনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৯ মে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়। চার্জ গঠনের দিন দুই ভাইকেই আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এ দিন জেল হেফাজত থেকে দুই ভাইকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। প্রণয়কে আনা হয় অ্যাম্বুল্যান্সে। কিন্তু তাঁকে এজলাসে কী ভাবে নিয়ে আসা হবে, তা নিয়ে অব্যবস্থা দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ বিচারক বলেন, ‘‘হুইলচেয়ার আনার ব্যবস্থা করতে পারতেন। তদন্তকারী অফিসার কী করছেন?’’ মামলার সরকারি আইনজীবী তপন রায় এবং তদন্তকারী অফিসার জানান, দু’জনকে জেল থেকে আনা হচ্ছে। এতে তাঁদের কোনও হাত নেই। তপন আরও জানান, হুইলচেয়ার নেই। বিচারক বলেন, ‘‘আই ও সাহেব যে এমন করবেন, তা জানা ছিল না। একটা বিকল্প ব্যবস্থা করে রাখা উচিত ছিল।’’ তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘আমি দেখছি, একটা হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা যদি করা যায়।’’
এর বেশ কিছু ক্ষণ পরে প্রণয়কে স্ট্রেচারে বসিয়ে এজলাসের বাইরে পর্যন্ত নিয়ে আসেন পুলিশকর্মীরা। তার পরে এজলাসের ভিতর থেকে একটি চেয়ার এনে দে পরিবারের ওই সদস্যকে স্ট্রেচার থেকে ধরাধরি করে সেই চেয়ারে বসানো হয়। সেই চেয়ার ঠেলে ঢোকানো হয় এজলাসে। শুনানি চলাকালীন ওই চেয়ারেই বসে ছিলেন প্রণয়। তাঁকে নিয়ে আসার কিছু আগেই এজলাসে নিয়ে আসা হয় প্রসূনকে। এর পরে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।
তপন বলেন, ‘‘আদালতে প্রণয় ও প্রসূন, দু’জনেই বলেছেন, তাঁরা নির্দোষ। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার খুন, খুনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্রের ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছে।’’ দে ভাইদের কোনও আইনজীবী না থাকায় তাঁদের হয়ে মামলা লড়ছেন লিগাল এড ডিফেন্স কাউন্সেল সিস্টেমের ডেপুটি চিফ তথা আইনজীবী সৈয়দ এরতাকা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে আদালতে প্রসূন যে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন, তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’’