জয়েন্টের ফল: হাই কোর্টের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবারেই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য, জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য, জট কাটবে?
আনন্দবাজার | ০৮ আগস্ট ২০২৫
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলপ্রকাশে জট পেকেছে। এ বার ওবিসি তালিকা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
শুক্রবার ব্রাত্য বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে হাই কোর্ট অন্য রকম কিছু বিবেচনা করতে পারে, তা আমাদের ধারণার মধ্যে ছিল না। আজকেই আমরা সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাব।’’
দীর্ঘ টালবাহানার পর ৭ অগস্ট, বৃহস্পতিবার রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল ঘোষণা হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ফের সেই ফলপ্রকাশ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের মামলায় নতুন ওবিসি তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। আদালত বলেছে, নতুন ওবিসি তালিকা মেনে মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। তালিকা প্রকাশ করলে তা করতে হবে পুরনো বিধি মেনেই।
বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপাতত নতুন ওবিসি তালিকা মেনে ১০টি পরীক্ষার মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হলে ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্রকে মান্যতা দিয়েই৷’’ ফলে বৃহস্পতিবার রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হয়নি। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের আয়োজিত আরও একাধিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশও আপাতত জটিলতার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। যার জেরে অনিশ্চয়তার মুখে রাজ্যের প্রায় তিন লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ।
গত বছর এপ্রিল মাসে কলকাতা হাই কোর্ট জানায়, ২০১০ সালের পর যত ওবিসি শংসাপত্র জারি হয়েছে, তা বাতিল করা হবে। যে হেতু ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্রগুলি বৈধ, তাই জয়েন্ট এন্টান্স বোর্ডের মামলায় এর আগে বিচারপতি চন্দ জানিয়েছিলেন, ২০১০ সালের আগের ওবিসি তালিকা মেনেই ফলপ্রকাশ করা যাবে। এর মাঝে গত ২৮ জুলাই ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি চন্দের বক্তব্য, কেন যথাসময়ে হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি? সে সময় হাই কোর্টের নির্দেশের উপর সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশও দেয়নি। অর্থাৎ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। আদালত অবমাননার সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার শুনানি ছিল হাই কোর্টে।
দ্বিতীয়ত, হাই কোর্টের আরও পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের পর মাত্র কয়েক দিনে কী ভাবে সকলকে ওবিসি শংসাপত্র প্রদান করা সম্ভব হল? আবেদন, যাচাই— সব প্রক্রিয়া কী ভাবে এত কম সময়ের মধ্যে সম্ভব হল? অর্থাৎ, মেধাতালিকা সঠিক পদ্ধতিতে তৈরি হয়নি। সে কারণেই এই মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়েছে হাই কোর্ট।
রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হয়েছিল গত ২৭ এপ্রিল। তার পর তিন মাস কেটে গেলেও সেই পরীক্ষার ফলপ্রকাশ ঝুলে রয়েছে।