নবান্ন-কালীঘাটে মিছিল নয়, বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জন্য দু’টি বিকল্প জায়গা বলে দিল পুলিশ, ‘অমান্য করলে কড়া পদক্ষেপ’
আনন্দবাজার | ০৮ আগস্ট ২০২৫
আরজি কর-কাণ্ডের এক বছরে, শনিবার নবান্ন অভিযান বা কালীঘাট অভিযান করা যাবে না। শুক্রবার এ কথা স্পষ্ট জানাল কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশ। পরিবর্তে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জন্য তারা দু’টি বিকল্প জায়গার কথাও বলে দিল। জানিয়ে দিল, নিয়ম না-মানলে এবং বিধিনিষেধ অমান্য করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
শনিবার আরজি কর-কাণ্ডের নির্যাতিতার মা-বাবা নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন। ওই কর্মসূচিকে সমর্থন করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশ জানাল, নবান্ন অভিযানের আয়োজকেরা এখনও কর্মসূচির জন্য কোনও অনুমতি চায়নি। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ সংবাদমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যম থেকে যা জানতে পেরেছে, তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা শুরু করেছে।
গত বছর ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকে নবান্ন অভিযান হয়েছিল। তাতেও প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সমর্থন ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এ বার তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তারাও এ বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানিয়েছে। যদিও শনিবারের নবান্ন অভিযানে ছাত্র সমাজের নেতাদেরও থাকার কথা বলে সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, নবান্ন অভিযান আটকাতে দু’টি মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। তার মধ্যে একটি মামলার রায় সম্পর্কে তারা অবগত। ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মৌলিক অধিকার’ জানিয়েও হাই কোর্ট বলেছে, হিংসা যেন না হয়, সরকারি সম্পত্তি যাতে নষ্ট না হয়। পুলিশের বক্তব্য, রাজ্য প্রশাসন প্রয়োজনে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এর পরেই পুলিশ জানিয়েছে, নবান্ন রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর। সেই ভবন এবং সংলগ্ন এলাকায় সব সময়ে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা থাকে। জারি থাকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা (সাবেক ১৪৪ ধারা)। তাই সেখানে প্রতিবাদ-মিছিল করা যাবে না। পরিবর্তে পুলিশ দু’টি বিকল্প জায়গার কথা বলেছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, একটি হল সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড। আর অন্যটি হল রানি রাসমণি চত্বর। সেখানে আইন মেনে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠীর আবেদন, ‘‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য আবেদন করুন। কোথা থেকে কত লোক আসবেন, কী ভাবে আসবেন, তা আগে থেকে জানান। তা হলে পুলিশ সেইমতো পদক্ষেপ করতে পারবে।’’
কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, শনিবার বিকেলে অভয়া মঞ্চের কালীঘাট অভিযান হওয়ার যে কথা ছিল, তা-ও করা যাবে না। সে কথা আয়োজকদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্যেও বিকল্প জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। সিপি মনোজ বলেছেন, ‘‘এখন সিসি ক্যামেরা, ড্রোন ইত্যাদি থাকে। ফলে কেউ আইন ভাঙলে বা কিছু করলে চিহ্নিত করা সম্ভব। পুলিশের বলে দেওয়া বিকল্প জায়গা ছাড়াও অন্যত্র ব্যবস্থা থাকবে।’’
রাজ্য পুলিশের এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘বিকল্প জায়গা ছাড়া অন্য জায়গায় জমায়েত হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু এটুকু স্পষ্ট যে, নবান্ন বা সংলগ্ন এলাকায় জমায়েত করা যাবে না।’’