• রাখিতে মল্লরাজাদের ‘দশ অবতার তাস’, বিলুপ্তপ্রায় শিল্প বাঁচাতে উদ্যোগী বিষ্ণুপুরের কন্যা
    প্রতিদিন | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • অসিত রজক, বিষ্ণুপুর: সাতটি সুতির কাপড়। পরপর তেঁতুলের আঠা দিয়ে আটকানো। উপরে খড়ি মাটির প্রলেপ দেওয়া। গোল আকারে কেটে আঁকা বিষ্ণুর দশম অবতারগুলির রূপ। যা পরিচিত ‘দশ অবতার তাস’ নামে। বিষ্ণুপুরের হারিয়ে যাওয়া শিল্প। যেখানে ফুটে উঠত ভগবান বিষ্ণুর ১০টি অবতার মৎস্য, কুর্মা, বরাহ, নরসিংহ, বামন,পরশুরাম, রাম, বলরাম, কৃষ্ণ ও কল্কি’র রূপ। মল্লরাজদের আমলে সেই বিলুপ্তপ্রায় শিল্পকেই রাখিতে ফুটিয়ে তুলছেন বিষ্ণুপুরের মেয়ে শিল্পা সূত্রধর।

    ইতিহাস বলে বিষ্ণুপুরের মল্লরাজাদের আমলে খুব প্রচলিত ছিল দশ অবতার তাসের খেলা। ৪৯ তম রাজা বীর হাম্বিরের রাজত্বকালে এই খেলা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তবে বিষ্ণুর দশটি অবতারের ছবি দিয়ে তৈরি এই তাস খেলার সঙ্গে সাধারণ তাস খেলার কোনও মিল নেই। কালের নিয়মে এই খেলা ও খেলোয়াড় দুই হারিয়েছে। ঘর সাজানোর সামগ্রী হিসাবে থেকে গিয়েছে  দশ অবতার তাস। এবার সেই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্দ্যোগী নব প্রজন্মের শিল্পা।  বিলুপ্ত শিল্পকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন রাখির মাধ্যমে।

    ২০২৩ সালে ৫০টি রাখি তৈরি করেন শিল্পা। যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১০০তে। শিল্পার হাতের ১০ অবতার রাখি ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে নাম কুড়িয়েছে। এবারও বহু জায়গা থেকে দশ অবতার তাসের রাখি তৈরি করার অনুরোধ এসেছিল। তবে সময়ের অভাবে সব অনুরোধ রাখতে পারেননি শিল্পা। শিল্পীর কথায়, “আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। সেই জায়গা থেকেই মাথায় আসে আমাদের বিষ্ণুপুরের হারিয়ে যাওয়া শিল্প ১০ অবতার তাস দিয়ে রাখি তৈরির বিষয়টি। তাস তৈরির পদ্ধতি আমার জানা ছিল। তা দিয়ে রাখি তৈরি করলাম। মানুষ সেটা সাদরে গ্রহণ করলেন। এই রাখির মাধ্যমে বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী দশ অবতার তাসকে মানুষ চিনুক, এটাই বড় পাওনা হবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)