দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল চত্বরে থাকা অবৈধ দোকানগুলিকে ক্যাম্পাসেরই এক পাশে পুনর্বাসন দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। যে অবৈধ দোকানগুলি ক্যাম্পাসে থাকা নিয়ে ‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’ ও পরে ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল’ আপত্তি জানিয়েছিল। যে সব দোকান তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে একাধিক বার কর্তৃপক্ষের তরফেও জানানো হয়। এমনকী সে সবের পুনর্বাসনের জন্য জায়গা দেখা হচ্ছে বলেও এক সময় জানিয়েছিলেন রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। শতাধিক ওই দোকানকে ক্যাম্পাসের এক দিকে জায়গা দেওয়া হবে বলে বুধবার জানালেন তিনি। এই সিদ্ধান্তে ‘ভোটের রাজনীতি’ বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ দিন মেডিক্যাল কলেজেও যান মেয়র। কথা বলেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের লোকজনের সঙ্গে। পরে মেয়র জানান, হাসপাতাল ভবন লাগোয়া কোনও দোকান থাকবে না। আগুন জ্বালিয়ে কিছু করা যাবে না। তা দোকানগুলিকে জানানো হয়েছে। ক্যাম্পাসে একটি পুরনো ক্যান্টিন রয়েছে। আরও একটি মা ক্যান্টিন হবে। এর বাইরে কিছু থাকবে না। মেয়র বলেন, ‘‘এখানে বহু মানুষ অনেক দিন ধরে ছোটখাট দোকান করে জীব- জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাঁদের এই প্রয়োজনকে অস্বীকার করা যায় না। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে, মেডিক্যালে বড় জায়গা রয়েছে। একধারে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে দোকানগুলি করে দিতে। কর্তৃপক্ষের তরফে দোকানের নম্বর থাকবে। তার থেকে বাড়বে না। পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। এক মাস পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।’’
বর্তমানে মেডিক্যালে আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্কের পিছনে তথা প্রসূতি বিভাগ লাগোয়া অংশে শতাধিক দোকান বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। হাসপাতালের সুপার তথা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখা হচ্ছে। আলোচনা চলছে।’’ বিষয়টি নিয়ে মেডিক্যালের প্রাক্তনী শাহরিয়া আলম জানান, ক্যাম্পাসের ভিতরে দোকান থাকলে যাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, সেটা নিশ্চিত করা দরকার।
মেডিক্যাল কলেজ যে এলাকায়, সেই মাটিগাড়ার বিজেপি বিধায়ক অনন্দময় বর্মন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নিয়মনীতি ঠিক নেই। দোকান থাকা নিয়ে মেডিক্যাল কাউন্সিল যদি আপত্তির কথা জানায়, তা হলে ক্যাম্পাসের বাইরে কাছাকাছি কোনও জায়গার ব্যবস্থা করে পুনর্বাসন দেওয়া হোক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সামনে ভোট। তাই এখন পুনর্বাসনের নানা কথা বলা হচ্ছে।’’ বাস্তবে তার কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
মেয়র জানান, পরবর্তীতে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) সঙ্গে বসে একধারে কোনও জায়গা থাকলে ছোট আকারে কিয়স্ক করে দিলে ভাল হয়। সেই চেষ্টা করা হবে। মহকুমা পরিষদ, এসজেডিএ, জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।