বর্ষায় ভাসে পান্ডুয়া ব্লকের বিস্তীর্ণ জনপদ। এ বারেও একই জল-ছবি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বহু জায়গায় নিকাশি ব্যবস্থাই নেই। এ কথা মানছে প্রশাসনও। নিকাশি ব্যবস্থা গড়া নিয়ে যথারীতি পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছে প্রশাসন। তবে কবে তা হবে, উত্তর মেলেনি।
জল না-সরায় বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ সিমলাগড় বাজারে জিটি রোড অবরোধ করেন স্থানীয় মাঠপাড়ার বাসিন্দারা। আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ অবরোধ তোলে। একই কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইটাচুনা খন্যান পঞ্চায়েত কার্যালয় ঘেরাও করেন গ্রামবাসীরা। দু’জায়গাতেই বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রাস্তা ছাপিয়ে জল ঘরে ঢুকছে। সাপ, পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। রান্নাবান্না করাও মুশকিল হচ্ছে। পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। পঞ্চায়েতে জানিয়েও কিছু হচ্ছে না। একই ক্ষোভ পান্ডুয়া পঞ্চায়েতেও।
সিমলাগড় ভিটাসিনের উপপ্রধান হাবিবুল রহমান, পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান বৈশাখী সরকার, ইটাচুনা খন্যানের প্রধান বাসন্তী হেমব্রমদের বক্তব্য, নিকাশি না-থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সেই ব্যবস্থা তৈরির টাকা পঞ্চায়েতের সামর্থ্যের বাইরে। বাসন্তী বলেন, ‘‘খাল সংস্কারের জন্য সেচ দফতরে জানিয়েছি।’’ হাবিবুল জানাচ্ছেন, গত বছরের মতোই পাম্প বসিয়ে জমা জল পাশের পুকুরে ফেলা হবে। এলাকাবাসীর একাংশের প্রশ্ন, ভরা পুকুরে জল সরবে কোথায়?
বিডিও সেবন্তী বিশ্বাসের দাবি, প্রতি বর্ষায় সেচ দফতর খাল সংস্কার করে। বুধবার জেলা সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার মানস মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। এ দিনই খন্যানের বেশ কিছু জায়গায় খাল সংস্কার শুরু করেছে সেচ দফতর। বিডিওর কথায়, ‘‘বেশ কিছু জায়গায় নিকাশি ব্যবস্থা নেই। তা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ কবে হবে? জবাব মেলেনি।
পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের সাতঘড়িয়া খারাজিপাড়া, জিটি রোডের ধারে বিদ্যুৎ দফতরের সামনে, বেনেপাড়া, স্টেশন রোড, তেলিপাড়া, ইটাচুনা খন্নান পঞ্চায়েতের মুলটি, মাকাল্ডি, মান্দারণ-সহ নানা জায়গায় জল দাঁড়িয়ে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। পান্ডুয়া স্টেশন সংলগ্ন খারাজিপাড়ার রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বৃষ্টিতে পাশের পুকুর টইটম্বুর। রাস্তায় জল। একাধিক বাড়িতেও। স্থানীয় বিশু ঘোষ, শম্ভু সিংহ, শিবশঙ্কর সাহা, শেখ হাসেমদের ক্ষোভ, ‘‘বাড়িতে জল ঢুকে জোঁক, সাপের উৎপাত বেড়েছে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো যাচ্ছে না।’’