সংবাদদাতা, মানিকচক: মানিকচকে গঙ্গানদীতে জারি লাল সতর্কতা। চরম বিপদসীমা থেকে ১৫ সেন্টিমিটার উপরে বইছে এই নদী। অন্যদিকে, ফুলহারে একদিনে জলস্তর বাড়ল প্রায় ২০ সেন্টিমিটার। ফলে জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। তার মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে ফুলহার ও গঙ্গার কমতে থাকা দূরত্ব। গঙ্গা থেকে ফুলহার নদীর দূরত্ব এখন কমে প্রায় ৮০০ মিটার। এভাবে জল বাড়তে থাকলে দু’টি নদী যদি মিলে যায়, রতুয়া সহ ভূতনির বিভিন্ন গ্রাম মুছে যাওয়ার আশঙ্কা।
শুক্রবার গঙ্গার জলস্তর বেড়ে হয়েছে ২৫.৪৫ মিটার। ঠিক একইভাবে ফুলহার নদীতে জলস্তর বেড়ে হয়েছে ২৭.৭৭ সেন্টিমিটার। উভয় নদীর জলস্তর বাড়ায় জলমগ্ন মানিকচক ভূতনি ও রতুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। মানিকচকের রামনগর, রবিদাস পাড়া, শিবনটোলা, জোৎপাট্টার অসংরক্ষিত এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। গোপালপুরে একেবারে বাঁধের গা ঘেঁষে বইছে গঙ্গার জল। ভূতনির কেশরপুর, কালুটোনটোলা, বসন্তটোলা জলমগ্ন হওয়ায় বাড়ি ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা। অন্যদিকে, রতুয়ার পশ্চিম রতনপুর, মুলীরামটোলা, শ্রীকান্তটোলা, কান্তটোলা গ্রামে ভাঙন অব্যাহত। বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে পালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নদীর জল মহানন্দাটোলা ও বিলাইমারীর কয়েকটি গ্রামে প্রবেশ করেছে। গঙ্গা ও ফুলহারের দাপটে এই সমস্ত গ্রাম থাকবে কী না, তা নিয়ে আতঙ্কে বাসিন্দারা।
এর মধ্যে গঙ্গা ও ফুলহারের স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ্যে আসতেই ঘুম উড়ছে মানিকচক ও রতুয়ার বাসিন্দাদের। মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে, গঙ্গা ও ফুলহার নদীর দূরত্ব একেবারে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮০০ মিটারে। ভূতনির মানিকনগরে ফুলহার ও ওপারের গদাই মহারাজপুর গঙ্গার মধ্যে এখন এই দূরত্ব দাঁড়িয়েছে।
রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, গত কয়েক বছর সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু কেন্দ্র বাংলাকে বঞ্চনা করে কোনও উদ্যোগই নেয়নি। পার্শ্ববর্তী বিহার, উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যে ভাঙন রোধের জন্য টাকা বরাদ্দ হলেও বাংলাকে বঞ্চিত করছে তারা। দ্রুত গঙ্গায় ড্রেজিং না করা হলে রতুয়ার মহানন্দটোলা, বিলাইমারি এমনকী ভূতনি বলে কোনও জায়গা থাকবে না।
মালদহ জেলা সেচ দপ্তরের আধিকারিক শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, গঙ্গা থেকে ফুলহারের দূরত্ব প্রায় ৮১০ মিটার রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা হবে।