৬৪ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৩৫৭৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে রাজ্য সেরা পূর্ব মেদিনীপুর
বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ২০২৪-’২৫আর্থিক বছরে রাজ্যের মধ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি টাকা লোন দিয়ে পুরস্কৃত হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। শুক্রবার কলকাতার বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন ও ঋণমঞ্জুর নিয়ে পারফরম্যান্সের নিরিখে সভা হয়। সেখানে ভালো পারফরম্যান্স করা জেলাকে পুরস্কৃত করা হয়। এক বছরে ৬৪হাজার ১২৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৩৫৭৩কোটি ৩৪লক্ষ টাকা ঋণ দিয়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। এই জেলাকে মোট ৩০৩৭কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। এজন্য গোষ্ঠীর টার্গেট ছিল ৫৩হাজার ২৮৫টি। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে আরও অনেক বেশি গোষ্ঠীকে ঋণ দিতে সক্ষম হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা।
জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা(ডিআরডিসি) বিভাগ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই কাজে সফল হয়েছে। এজন্য রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার অফিসার সায়ন্তন বসুর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
গত কয়েক বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন ও ঋণদানে রাজ্যের মধ্যে এগিয়ে থাকছে। ২০২৪-’২৫আর্থিক বছরে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠনে দক্ষিণ ২৪পরগনা প্রথম হয়েছে। তবে, ঋণদানে সব জেলাকে টপকে শীর্ষে পূর্ব মেদিনীপুর। ২০২৫-’২৬আর্থিক বছরে ৩৪৪০কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। গত ১এপ্রিল থেকে এপর্যন্ত ৮৪০কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এই জেলায় গোষ্ঠীর ঋণ আদায় নিয়ে সমস্যা হয় না। এনপিএ-র হার খুবই কম।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৭৭হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তারমধ্যে ৭০হাজারের বেশি গোষ্ঠী ঋণ পাচ্ছে। গত বছর ছ’হাজার নতুন গ্রুপ তৈরির টার্গেট ছিল। মোট ৫৮২২টি গোষ্ঠী গঠন করা হয়। চলতি আর্থিক বছরে জেলায় আরও ৬৫০০গোষ্ঠী তৈরির টার্গেট আছে। এপর্যন্ত ৩২০০গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। গত জুন মাসে জেলাজুড়ে প্রত্যেক মহিলা ভোটারের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করেছে পঞ্চায়েতের কর্মী, সঙ্ঘ, মহাসঙ্ঘের সদস্যরা। কোন কোন মহিলা ভোটার এখনও পর্যন্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বাইরে আছেন তাঁদের চিহ্নিত করে একশো শতাংশ মহিলাকে গ্রুপের মধ্যে আনার টার্গেট নিয়ে ওই বিশেষ অভিযান চালানো হয়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা গ্রুপ লোন ছাড়াও নিজে উদ্যোগপতি হয়ে আলাদাভাবে ঋণ পেতে পারেন। সর্বনিম্ন ৭৫হাজার টাকা থেকে ১০লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়।
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বরাবরই ভালো জায়গায় থাকি। গোষ্ঠীর সদস্যারা নিয়ম করে ঋণ নেন এবং তা শোধ করে দেন। রাজ্যের মধ্যে প্রথম হওয়ায় শুক্রবার আমাদের জেলাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।