• গুজরাতে গভীর রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় পুলিসের অত্যাচার, বাড়ি ফিরে স্বস্তিতে পিংলার শ্রমিকরা
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি সন্দেহে থানায় নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। কথা বলারও অনুমতি ছিল না। এমনকী, সঠিক ঠিকানা বললেও বারংবার অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও মনের জোর ভাঙেনি। অবশেষে শুক্রবার গুজরাতের সুরাত থেকে বাড়ি ফিরলেন ১৩জন পরিযায়ী শ্রমিক। ওই শ্রমিকদের বেশিরভাগের বাড়ি পিংলা ব্লক এলাকায়। ঘরের ছেলে ফিরে আসায় খুশি গ্রামের মানুষজন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গুজরাত থেকে ট্রেনে ফিরেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। গুজরাত পুলিসের কাছে তাঁরা প্রত্যেকে বেধড়ক মার খেয়েছেন। 

    রাজ্যে ফেরা ১০জনের বাড়ি পিংলা ব্লকের সাহড়দা গ্রামে। দু’জনের বাড়ি সবং ব্লকে। একজনের বাড়ি গঙ্গাদাসপুর এলাকায়। তাঁরা প্রত্যেকে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজের জন্য গুজরাত গিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয়েছিলেন পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি। তিনি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের টিকিটও কেটে দিয়েছেন। এদিন অজিতবাবু বলেন, পরিকল্পনা মাফিক পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার সহ বিভিন্ন রাজ্যের বহু শ্রমিক এই রাজ্যে কাজ করতে আসেন। বাংলার মানুষের তরফে তাঁরা সহযোগিতা পান। আসলে এটাই  বিজেপি সরকারের আসল রূপ। ফের হেরে যাওয়ার ভয়ে এসব করছে। জেলার পুলিস ও প্রশাসন সহযোগিতা করেছে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পিংলা ব্লক এলাকার মানুষ মূলত চাষবাস করেই জীবন কাটান। পিংলা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক কাজের সন্ধানে গুজরাতের সুরাতে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছনোর পরই অত্যাচার শুরু হয়। জানা গিয়েছে, ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা গত ২৪জুলাই গুজরাতের উদ্দেশে রওনা দেন। ২৬ জুলাই সকালে তাঁরা গুজরাতে পৌঁছে যান। রাতে খাবার খেয়ে তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন। তার কিছুক্ষণ পর থেকেই শুরু হয় সমস্যা। সাহড়দা গ্রামের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক অরূপ জানা বলেন, নতুন কাজের জায়গায় গিয়ে সকলেই খুশিতে ছিলাম। রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছিলাম। আচমকা পুলিস আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই জানালা ভাঙে পুলিস। আমাদের ঠিকানা জানতে চায়। সঙ্গে থাকা আধার কার্ড, পাসপোর্ট দিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরও মারধর করা হয়। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর মেরে মুখ ফাটিয়ে দেয়। আর বাড়িতে ফিরতে পারব কি না তা বুঝতে পারছিলাম না। বিধায়ক অজিতবাবু ছাড়াও জেলার পুলিস ও প্রশাসন খুবই সহযোগিতা করেছে। 

    এদিন পরিযায়ী শ্রমিকদের খড়্গপুর স্টেশন থেকে আনতে যান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পরিযায়ী শ্রমিক রবি সাউ, সাগর দাস, সন্টু হাজরা বলেন, খুবই কষ্টের মধ্যে ছিলাম। খুবই অত্যাচার করেছে পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)