সংবাদদাতা, আরামবাগ: কামারপুকুর বাজারে সব্জির দাম আগুন। সাধারণ মানুষের পকেটে টান। বিক্রেতারা বলছেন, নিম্নচাপ এবং বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে ছাড়া জলে গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাওয়াতে সব্জির আমদানি কম। তাই প্রায় দ্বিগুণ দাম সব্জির। আম জনতার বক্তব্য, আগে ১০০ টাকা নিয়ে গেলে ব্যাগ ভর্তি সব্জি কেনা যেত। এখন দুশো টাকাতেও ব্যাগ ভর্তি হচ্ছে না। যে সব্জির দাম ১০ টাকা ছিল সেই সব্জি এখন ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের সব্জি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কামারপুকুর পঞ্চায়েতের প্রধান রাজদীপ দে বলেন, কামারপুকুর সব্জি বাজার হুগলির মধ্যে অন্যতম বড় বাজার। প্রায় ৫০০ জন বিক্রেতা এখানে সব্জি বিক্রি করেন। গোঘাট, কামারপুকুর, পাটপুর, বদনগঞ্জ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গরবেতা, চমকাইতলা প্রভৃতি জায়গাগুলি কৃষিনির্ভর। বর্তমানে নিম্নচাপের ফলে বৃষ্টি এবং বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে ছাড়া জলে মাঠের ফসল ডুবে গিয়েছে। জমিতে জমে থাকা অতিরিক্ত জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোয়া ধান ও সব্জি চাষ। এর জেরেই কামারপুকুর বাজারে সব্জির দাম বেড়েছে। স্থানীয় ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে টানা বৃষ্টির ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব্জি খেত। বিশেষত ফুলকপি, বেগুন, পটল, উচ্ছে, কাঁকরোল, শশা, ঝিঙে এইসব সব্জি চাষ অর্ধেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। মাঠে জল জমে থাকার কারণে কৃষকরা নতুন করে বীজ বপন বা চারা রোপণও করতে পারছেন না। ফলে আগামী সপ্তাহগুলিতেও সব্জির জোগানে ঘাটতির সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
এই অবস্থায় পাইকারি বাজারে জোগান কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারেও। কামারপুকুর বাজারের সব্জি বিক্রেতারা জানালেন, কেজি প্রতি শসার দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বেগুন ৮০ টাকা, টমেটো ৭০ টাকা, লঙ্কা ১২০ টাকা, হোপা ও ঝিঙে ৬০ টাকা, লাউ এক পিস পঞ্চাশ টাকা, উচ্ছে ৭০ টাকা, বিনস ১৮০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা, ফুলকপি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটল ৯০ টাকা। বাজারের সব্জি বিক্রেতা তাপস লাহা বলেন, চাষের জমিতে জল জমে যাওয়ায় সব্জি চাষে ক্ষতি হয়েছে। তাই আমদানি ভালো হচ্ছে না। যার ফলে আমাদের পাইকারি দরে সব্জি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা অল্প লাভ রেখে কামারপুকুর বাজারে সব্জি বেচছি। বর্ষা না কাটলে দাম কমার সম্ভাবনা খুবই কম। স্থানীয় বাসিন্দা প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, হঠাৎ করে সব্জির দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের খরচ বেড়ে গিয়েছে। সব্জি কিনতে গিয়ে পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এরকম চললে আলু সেদ্ধ-ভাত খেয়েই কাটাতে হবে।