• বিপদসীমা পার ভাগীরথীর, প্লাবিত কালীগঞ্জের বহু গ্রাম
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: লাগাতার বৃষ্টিপাতে বেড়েছে ভাগীরথীর জলস্তর। বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে। যার জেরে কালীগঞ্জ ব্লকের নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে গোবরা পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর, নয়াচর, বাদলি পাড়া, এই তিনটি গ্রাম কার্যত জলের তলায় চলে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এখানকার চাষের জমি। ওই এলাকার প্রায় ৮০০ বিঘা জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। হাজারের বেশি বাসিন্দা জলবন্দি। বৃষ্টিপাত আরও বাড়লে চরম সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। বর্তমানে গ্রামের বাসিন্দারা নৌকায় করে চলাচল করছেন। একই অবস্থা বল্লভপাড়া ঘাটেরও। সেখানেও নদীর জল ডাঙায় উঠে এসেছে। যার জন্য নদীর উপর থেকে নৌকা করে ভারী যান চলাচল ব্যহত হয়েছে।‌ শুক্রবার বল্লভপাড়া পরিদর্শনে যান কালীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেফালি খাতুন।‌ তিনি বলেন, ভাগীরথীর জলস্তর অনেকটাই বেড়েছে। যার জন্য নদী পাড়ের বেশ কিছু গ্রামে জল ঢুকেছে। আমরা বিষয়টি নজরে রাখছি। এখনই আতঙ্কের কিছু নেই। তবে এলাকাবাসীর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি।

    স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ সরকার বলেন, আমাদের এলাকার তিনটি গ্রাম জলের তলায় চলে গিয়েছে। বৃষ্টির কারণে জলস্তর বেড়েই চলেছে। এখন আমরা নৌকা করে চলাচল করছি।‌ চাষের জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।‌ নদীয়া জেলায় ভাগীরথীর বিপদসীমা ৮.৪৪ মিটার। সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভাগীরথীর জলস্তর ছিল ৮.৯৫ মিটার। যা বিপদসীমার অনেকটাই উপরে। উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনেরও। সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, নিচু জায়গাগুলোতেই বর্ষাকালে জল ঢুকে যায়। তবে বন্যা পরিস্থিতি এখনও হয়নি।‌ আমরা নজর রাখছি। অন্যদিকে চলতি বছরে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে নদীয়া জেলায়। জেলার বার্ষিক বৃষ্টিপাত এবার  গড় ছাপিয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় প্রতিবছর গড়ে ১২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এবছর এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১২৯৯ মিলিমিটার। তাই আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। সেক্ষেত্রে নদীর জলস্তর আরও কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা করা হবে। অন্যদিকে নাকাশিপাড়া ব্লকের ধর্মদা গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবোডাঙ্গায়ও নদীর জল ঢুকেছে।‌ ওই এলাকায় প্রশাসনের তরফ থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ করা হচ্ছে। ওই এলাকার প্রায় ১৫০ বিঘা ধানজমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ব্লকের বিডিও স্নেহাশিস দত্ত বলেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরেও আনা হয়েছে। ওই এলাকা থেকে এক কিলোমিটার দূরে উদমডাঙ্গা এলাকার একটি প্রাইমারি স্কুলকে সেন্টার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কোনও গ্রামবাসী নদীর জলস্তর বৃদ্ধির কারণে সমস্যায় পড়লে সেই স্কুলে থাকতে পারবেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)