নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নারকেলডাঙায় গৃহবধূ শ্বেতাপ্রসাদ সাউয়ের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় পুলিস অভিযুক্ত স্বামী রোহিতকুমার সাউকে গ্রেপ্তার করেছে। শিয়ালদহ বৈঠকখানা রোডের বাসিন্দা শ্বেতার বাবা ওমপ্রকাশ প্রসাদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঘটনায় স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি সহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে খুন, বধূ নির্যাতনের মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছে নারকেলডাঙা থানার পুলিস। কলকাতা পুলিসের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার এই খবর জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর দুটো নাগাদ শ্বশুরবাড়িতে দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শ্বেতাকে। তড়িঘড়ি তাঁকে নীলরতন সরকার হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শ্বেতার বাবা ওমপ্রকাশ প্রসাদের অভিযোগ, পণের জন্য তাঁর মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। এমনকী পরপর দু’টি কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ায় শ্বেতার উপর নির্যাতন চলত।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে রোহিতের সঙ্গে বিয়ে হলেও সম্প্রতি এই দম্পতির মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। দিন কয়েক আগে স্বামী-স্ত্রীর বচসার সময় শ্বেতাকে বেল্ট, লোহার রড দিয়ে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। সমস্যা মেটাতে এই দম্পতির মেঘালয় বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আর্থিক সমস্যার জেরে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন রোহিত। জিজ্ঞাসাবাদে রোহিত পুলিসকে জানিয়েছে, আর পাঁচটা দিনের মতো বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা নাগাদ তিনি দোকানে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। দুপুর দুটো নাগাদ বাড়ি ফিরে তিনি স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
এদিকে, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শ্বেতার ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ‘ফাঁস দিয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন শ্বেতা। তবে মৃতদেহের পিঠে একাধিক কালশিটে দাগ মিলেছে।’ যা দেখে, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের অনুমান, সম্ভবত ভোঁতা কিছু দিয়ে মারধরের ফলে এই কালশিটে তৈরি হয়েছে।