• 'আজও প্রতি রাতে মেয়ের কান্না শুনতে পাই,' এক বছর পরও ন্যায়বিচার চাইছেন নির্যাতিতার মা-বাবা
    আজ তক | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • ৮ অগাস্ট, ২০২৪-এর রাত। আরজি কর হাসপাতালের ভিতর কর্মরত অবস্থায় নারকীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে প্রাণ চলে গিয়েছিল একমাত্র মেয়ের। বছর ঘুরেছে সেই নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার। তবু প্রতি রাতে মেয়ের জন্য চোখের জল ফেলেন আরজি কর কাণ্ডে নিহত তরুণীর বাবা-মা। ধর্ষণ ও খুনে সাজাপ্রাপ্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় আজীবন কারাবাসে। তা সত্ত্বেও নির্যাতিতার বাবা-মা বলছেন, 'মেয়ে বিচার পেল কই?'

    ফের সংবাদ শিরোনামে আরজি কর। বছর ঘুরতেই আবারও উত্তাল রাজপথ। শুক্রবার জুনিয়র ডাক্তাররা মশাল মিছিল করেন কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত। তারপর শ্যামবাজারে পালিত হয় 'অভয়া রাত'। ভোর ৪টে পর্যন্ত চলা সেই সমাবেশে মধ্যরাতে যোগ দিয়েছিলেন মেয়ে হারা বাবা-মা। তাঁদের আক্ষেপ, 'এক বছর হয়ে গেল, এখনও সুবিচার মিলল না।' তবে তাঁদের বিশ্বাস, বিচার তাঁরা একটা না একটা দিন ছিনিয়ে আনবেনই। 

    কী বললেন নির্যাতিতার বাবা-মা?
    কান্না ভেজা গলায় নির্যাতিতার মা বলেন, 'আজও প্রতি রাতে মেয়ের কান্না শুনতে পাই। অনেকেই ভাবছেন আমরা বিচার পেয়ে গিয়েছি। তবে আদৌ তা হয়নি। কেউ কেউ প্রচার করছে, রাজনীতিতে নামার জন্য বা ভোটে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে আমরা প্রতিবাদ করছি। কিন্তু এটুকু বলতে পারি, রাজনীতিতে আসার কোনও পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমরা শুধু মেয়ের বিচার চাই।' তাঁর প্রশ্ন, 'কেন আন্দোলনে নেই মেয়ের সহপাঠীরা? মেয়ের সঙ্গে কী কী ঘটেছিল তা কি হাসপাতালের আর কেউ সত্যিই জানতেন না? কেন সেই রাতে আমার মেয়ের সঙ্গে যাঁরা ছিল, সেই ডাক্তাররা আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি? কেন জানতে চায়নি আমরা কেমন আছি? ওই আরজি কর হাসপাতালের মধ্যেই এখনও আসল অপরাধীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। সত্যিই কি সন্দীপ ঘোষ কিছু জানতেন না? সঠিক তদন্ত না করল কলকাতা পুলিশ না CBI। আমার মেয়ে এ পৃথিবীতে না থাকলেও ওকে কোনও দিন আমরা ভুলতে দেব না। তার নাম যেন মুছে না যায় ওর আপ্রাণ চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাব।'

    নির্যাতিতার বাবার বক্তব্য, 'গত বছর ৯ অগস্ট আমাদের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। আমার মেয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিল। কিন্তু তাঁর উপর যে অত্যাচার হয়েছে তা কোনও দিনই আমরা ভুলতে পারব না। আমার মেয়ে ন্যায়বিচার পায়নি। এ বিষয়ে আমরা এখনও পর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও সহযোগিতা পায়নি।    এক বছর হয়ে গেলেও CBI আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। জুনিয়র ডাক্তারেরা যারা আমার ছেলেমেয়ের মতোই তারা আমার সঙ্গে আছে। তবে তাদের অনেকের মধ্যেই হুমকি সংস্কৃতি রয়েছে। অনেকেই সুযোগসন্ধানী। তাদেরকেও বাছাই করে রাখতে হবে। মেয়ের জন্য যারা লড়াই করছে, তাদের আলাদা করে ধন্যবাদ আমি জানাব না। আমার বিশ্বাস, তারা ভবিষ্যতেও আমাদের সঙ্গে এই লড়াইয়ে থাকবে।'

     
  • Link to this news (আজ তক)