• বাজার ভরে যাবে ইলিশ মাছে, ফের সাগরে ট্রলার নিয়ে মৎস্যজীবীরা, দাম কি কমবে? যা জানা গেল
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণবঙ্গে কমেছে বৃষ্টির দাপট। ফের সাগরে ট্রলার নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় নতুন করে ইলিশ ধরার অভিযান শুরু হয়েছে। ফলে সপ্তাহের শুরুতেই মাছের বাজারে ইলিশের জোগান বাড়বে বলে আশাবাদী মৎস্যজীবীরা। 

    বছরের এই সময় ঘন বর্ষার জন্য সাধারণত বাজারে ইলিশের জোয়ার দেখা যায়। কিন্তু এবার মরসুমের প্রায় অর্ধেক কেটে গেলেও বাজারে সেভাবে ইলিশ মাছ দেখা যায়নি। যার জন্য অনেকেরই সাধ থাকলেও সাধ্য হয়নি এই মাছ কেনার। মূলত নিম্নচাপ এবং তার থেকে তৈরি হওয়া খারাপ আবহাওয়ার কারণে বহুদিন মৎস্যজীবীরা ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। যার জন্য তাঁদের পোহাতে হয়েছে আর্থিক ক্ষতিও। আবহাওয়া কিছুটা ভালো হতেই নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন সুন্দরবন এলাকার মৎস্যজীবীরা। 

    কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা এবং সাগরের ঘাটগুলো এখন জনশূন্য। মৎস্যজীবীদের ট্রলার আবারও ইলিশ শিকারে রওনা দিয়েছে বঙ্গোপসাগরে। জেলা মৎস্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত ১৫ জুন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার মরসুমের শুরুর দিন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস সময়ের মধ্যে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা জাল ফেলতে পারেননি। সব মিলিয়ে মেরেকেটে ১৫ থেকে ২০ দিন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে পেরেছেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু তাতেও কিন্তু প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। অথচ বাজারে ইলিশের দাম কমেনি। বরং অন্য বছরের তুলনায় এবার ইলিশের দাম যথেষ্টই চড়া। 

    অর্থনীতির নিয়ম হল বাজারে যোগান বাড়লে দাম কমে। কিন্তু ইলিশের ক্ষেত্রে তার ব্যক্তিগত হচ্ছে কেন? 

    ট্রলার মালিকের একাংশ জানাচ্ছেন, সমুদ্র থেকে যে ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে তার বেশিরভাগই চলে যাচ্ছে কোল্ড স্টোরেজে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা ইলিশ ব্যবসায় মোটা টাকা বিনিয়োগ করছেন। আলু বা পেঁয়াজের মতো ওই বড় ব্যবসায়ীরাই ইলিশের বাজারে দর নিয়ন্ত্রণ করছেন। এখন পাইকারি বাজারে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০০ টাকায়। সেই মাছ পাইকাররা কিনে খোলাবাজারে বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়। 

    কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতির ব্যাখ্যা, 'যখন মাছের আমদানি বেশি হয় তখন পাইকাররা ডায়মন্ড হারবার এবং কলকাতার বিভিন্ন স্টোরেজে ইলিশ স্টোর করতে শুরু করে। যেহেতু এর আগের যাত্রায় ভালো মাছ পাওয়া গিয়েছে সেজন্য পাইকাররা কিছুটা স্টোর করেছেন।' মৎস্যজীবীদের কথায়, যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ট্রলারগুলি যেতে পারেনি সেজন্য স্টোর থেকে মাছ বের করা হয়েছিল এবং সেই মাছ চড়া দামে বিক্রি করা হয়েছে। 

    সামনেই উৎসবের মরশুম। ভরা বর্ষায় ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই। বাজার ইলিশে চেয়ে গেলে, দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সাধ্যের মধ্যে থাকলে তার স্বাদ পেতে পারেন সাধারণ মানুষ। পুজোর মরশুমেও কব্জি ডুবিয়ে ইলিশ উপভোগ করতে পারবেন মধ্যবিত্তরা। আবারও দুর্যোগের কালো মেঘ ঘনিয়ে আসার আগেই তাই মৎস্যজীবীরাও সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছেন।
  • Link to this news (আজকাল)