• গভীর রাতে বজ্রপাত, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ছাদ, পুড়ে গেল ঘরের জিনিসপত্র, গুরুতর আহত এক পরিবারের সকল সদস্য
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: বজ্রাঘাতে ফাটল ধরল বাড়ির ছাদে। তৈরি হল বড়সড় গর্ত। তাও বেশ অনেকটাই। ভেঙে গেল সানসেট। পুড়ে গেল সমস্ত বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম। বজ্রপাত অথচ ধরনটা অনেকটাই উল্কাপাতের মতো। এমন বজ্রপাত দেখে অবাক গৃহকর্তা থেকে স্থানীয়রা সকলেই। 

    অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার গভীর রাতে পান্ডুয়ার খন্যানে। ঘটনায় আহত হয়েছেন এক শিশু সহ পরিবারের সদস্যরা। গভীর রাতে বাজ পড়ে খন্যানের হাটপুকুর গ্রামের বাসিন্দা রাজু মালিকের বাড়িতে। বাড়ির ছাদে গর্ত হয়ে যায়। ফেটে যায় গোটা ছাদ। বাড়ির সানসেটও ভেঙে যায়। পুড়ে যায় ঘরে থাকা টিভি, ফ্রিজ সহ সমস্ত বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম। আহত হয় তিন মাসের শিশু। আহত হয়েছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। 

    আহত শিশুটিকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মধ্য রাতে পান্ডুয়ার ইটাচুনাচুনা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হাটপুকুর গ্রামে ঘনঘন বজ্রপাত হয়। সঙ্গে চলতে থাকে প্রবল বৃষ্টি। তখনই হঠাৎ বজ্রপাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাজু মালিকের বাড়ির ছাদ। ছাদে গর্ত হয়ে যায়। বিদ্যুতের ঝলক আর প্রচন্ড শব্দে তিন মাসের শিশু কন্যা আহত হয়। শিশুর মা বাবাও আহত হন। তাঁদের ইটাচুন গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর শিশুটিকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

    এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা মন্টু মণ্ডল বলেছেন, রাতে গ্রামে যেভাবে বজ্রপাত হচ্ছিল তাতে যথেষ্টই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গ্রামে। সকালে তিনি জানতে পারেন স্থানীয় একটি বাড়িতে বজ্রপাত হয়েছে। সেই বাড়ির একটি শিশু আহত হয়েছে। সঙ্গে পরিবারে অন্য সদস্যরা আহত হয়েছে। বাড়ির সমস্ত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে আশেপাশে থাকা একাধিক বাড়িতেও। ঘটনার পর থেকে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে আছে। আপাতত শিশুটি চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি ব্লকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। 

    প্রসঙ্গত, গত মাসেই বজ্রপাতে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বাংলায়। গত ২৪ জুলাই আচমকা বজ্রাঘাতে রাজ্যজুড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। এদের মধ্যে ৮ জনই বাঁকুড়ার বাসিন্দা। বাঁকুড়া ছাড়াও বর্ধমানে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ১, পুরুলিয়ায় ১ জন এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বেশির ভাগের মৃত্যুই মাঠে কাজ করতে গিয়ে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

    দুপুর থেকে হঠাৎ করেই বদলে যায় আবহাওয়ার চিত্র। সকাল থেকে রোদ থাকলেও দুপুরের পর কালো করে মেঘ করে আসে বাঁকুড়া জেলায়। প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি বজ্রপাত এবার বাঁকুড়াবাসীর কাছে হয়ে উঠল অভিশাপ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রবল বৃষ্টি আর তার সঙ্গে বজ্রপাতে জেলার একাধিক ব্লকে শুরু হয় এক প্রকার প্রাকৃতিক তাণ্ডব। ফলত, মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বজ্রাঘাতে প্রাণ হারালেন অন্তত ৮ জন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে ভয় আর শোকের মেঘ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁকুড়ার কোতুলপুর, পাত্রসায়র, জয়পুর, ইন্দাস ও ওন্দা ব্লক। 

    ছবি পার্থ রাহা
  • Link to this news (আজকাল)