আজকাল ওয়েবডেস্ক: পারস্পরিক সমন্বয়সাধন। ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা নিয়ে বারবার কথা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জিও সরব হচ্ছেন এই বিষয়টি নিয়ে। নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এই প্রসঙ্গটিই উঠে আসছে বারবার।
সোমবার দলের সাংসদদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হন তৃণমূল সুপ্রিমো এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। যেখানে তিনি বলেন, লোকসভায় দলের কো-অর্ডিনেশন বা সমন্বয়সাধন ঠিকমতো হচ্ছে না। ঠিক ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মালদা জেলার দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন অভিষেক। সেখানে তিনি জোর দেন এই 'সমন্বয়সাধন' শব্দটির উপরেই। বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, সাংসদ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন দলের সঙ্গে সমন্বয়সাধন করেই এগোতে হবে। নিজের খেয়ালখুশি অনুযায়ী কিছু করা যাবে না। একেবারে নিচের স্তর থেকে উপরের স্তর, প্রতিটি স্তরেই যেন এই সমন্বয়সাধন থাকে। ওই নেতার কথায়, একেবারেই সত্যি কথা। কারণ, দেখা যাচ্ছে হঠাৎ হঠাৎ একজন নেতা বা নেত্রী তাঁর পছন্দ অনুযায়ী এলাকায় দলের 'প্রোগ্রাম' সাজাচ্ছেন। যেটা সময়মতো জানতে পারছেন না তাঁর উপরের স্তরের নেতা। ফলে বিষয়টি নিয়ে যখন তাঁর কাছে কেউ প্রশ্ন করছেন তখন তিনি আমতা আমতা করছেন। অথচ যদি বিষয়টি আগে থেকে তাঁর বা বাকিদের সঙ্গে কথা বলে নিয়ে করা হত তাহলে হয়ত জিনিসটা আরও সুন্দর করে হত।
তাঁর কথায়, 'দল মানে যে সবাই এটা যতক্ষণ না পর্যন্ত সবাই বুঝতে পারব ততক্ষণ পর্যন্ত তো ঠিকঠাক কিছু সম্পন্ন হবে না। বিশেষ করে সামনে যখন বিধানসভা নির্বাচন তখন তো পারস্পরিক বোঝাপড়াটা আরও বেশি জরুরি।' অভিষেক এই বিষয়টিই বোঝাতে চেয়েছেন বলে তিনি মনে করেন। এর পাশাপাশি আরও যে বিষয়টি নিয়ে অভিষেক বোঝাতে চেয়েছেন সেটা হল পদাধিকারী ব্যক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া এবং তাঁর কথা মেনে চলা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক পরিষ্কার জানিয়ে দেন একজন হয়ত আরেকজনকে পছন্দ করছেন না, কিন্তু যাদেরকে দলীয় পদ দেওয়া হয়েছে তাঁদেরকে কিন্তু মানতেই হবে।'
ওই নেতা বলেন, 'রীতিমতো কঠোরভাবে অভিষেক বলে দিয়েছেন, এর যদি অন্যথা হয় তাহলে কিন্তু পরিণাম ভালো হবে না।' কার্যত নানা সময় বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফুটে উঠেছে। সম্প্রতি মালদা জেলার একটি অনুষ্ঠানে দলের এক বর্ষীয়ান বিধায়কের সঙ্গে মঞ্চের উপরেই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের অভিযোগ উঠেছে ওই জেলারই এক 'জুনিয়র' নেতার। যা ভাইরাল হতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। ঘটনার পর যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়ে জেলা তৃণমূল। দলের কিছু কিছু স্থানীয় নেতৃত্বের প্রতি এই যে একটা 'ডোন্ট কেয়ার' মনোভাব সেটা বোঝাতে গিয়েই অভিষেক এই কথা বলেছেন বলে ওই নেতার দাবি। মঙ্গলবারের এই বৈঠকে জেলা সভাপতি, সাংসদ, বিধায়ক বা পুর চেয়ারম্যানরা ছাড়াও ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধানরাও।