মিল্টন সেন, হুগলি: তামলিপাড়াতেই রয়েছে হরিদাস দত্তের বাড়ি। সেই বাড়িটির বর্তমানে ভগ্নদশা। হুগলি চুঁচুড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বাড়িটিকে বিপদজনক ঘোষণা করা হয়েছে আগেই। কিন্তু শরীকি বিবাদ থাকায় বাড়িটি ভাঙ্গা সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির পিছনের দিকের একাংশ হড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে দাস পরিবারের বাড়ির সামনে। তাতে দাস পরিবারের বাড়িতে ঢোকার প্রধান গেট বন্ধ হয়ে যায়।
বাড়ির ভেতর আটকে পড়ে সুতপা দাস ও তার নাতি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের কর্মীরা। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। এরপরেই ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয় চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার ও হুগলী চুঁচুড়া পৌরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের সিআইসি জয়দেব অধিকারী। পরে পৌরসভার পক্ষ থেকে লোক লাগিয়ে দাস পরিবারের বাড়ির সামনে পড়ে থাকা ভেঙে পড়া বাড়ির অংশ সরানোর কাজ শুরু করে।
প্রসঙ্গত, ঘুমন্ত অবস্থায় চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক দম্পতির। মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে।মৃত দম্পতির নাম মহম্মদ ইউনুস মল্লিক( ৫৭) ও রিজিয়া বেগম মল্লিক (৫৩)।
মঙ্গলবার আনুমানিক ভোর সাড়ে চারটের সময় জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের মাঠ নসিপুর গ্রামের প্রৌঢ় মহম্মদ ইউনুস মল্লিকের মাটির বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় ইউনুস দম্পতি চাপা পড়ে যায়। পাড়া পড়শিরা বাড়ি ভেঙে পড়ার শব্দ শুনে ছুটে যান। কিন্তু কোনও ভাবে তাঁদের উদ্ধার করতে পারেননি।শেষে জেসিবি ডাকা হয়। জেসিবির মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মাটির বাড়ির মাটি সরিয়ে দু'টি দেহ উদ্ধার করা হয়।
জামালপুর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে জানান। জামালপুর থানার পুলিশ মৃতদেহ দু'টির ময়নাতদন্ত করার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠায়। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে গোটা এলাকায়।
গত দুদিন বৃষ্টির পরিমাণ একটু কমেছে। খানিকটা রোদ ওঠায় কাঁচা মাটিতে টান ধরছে। ভেঙে পড়ছে মাটির বাড়ি। এখনও গ্রামে অনেক মাটি বাড়ি আছে। সব গরিব মানুষ বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। অনেকের পুরনো মাটির দোতলা, তিনতলা বাড়ি আছে। আজকাল মাটির বাড়ি মেরামত একটা ঝকমারির কাজ। খরচসাপেক্ষও বটে। কিন্তু চট করে পাকা বাড়ি বানাবার সামর্থ সবার নেই।
এসময় তাই অনেক মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে। বিপন্নতা নিয়েই বাস করেন গরিব মানুষ। পূর্ব বর্ধমান জেলার দামোদর অববাহিকায় দক্ষিণ দিকে দক্ষিণ দামোদর অঞ্চল। রায়না, খন্ডঘোষ, জামালপুর, এই এলাকাগুলোয় এ সময় দামোদর, মুন্ডেশ্বরীর জল ধাক্কা মারে। প্লাবিত হয় এলাকাগুলি।
রায়নার নাড়ুগ্রাম অঞ্চলের পরপর গ্রাম, ত্রিশটির বেশি জলমগ্ন। সেখানে অনেকগুলি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দু'দিন আগে প্রধান ও অন্যরা এসে একটি করে ত্রিপল দিয়ে গেছেন। রায়নারই আদমপুর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। রবিবার সেখানে ত্রাণ বিলি করতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।