সোশ্যাল মিডিয়া দেখে একী করলেন স্ত্রী! দুঃখে ছবি পুড়িয়ে শ্রাদ্ধ করলেন স্বামী
আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: অন্যরকম ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর ২৪ পরগণার হিঙ্গলগঞ্জ। এই এলাকার উত্তর মামুদপুর গ্রামে ঘটল এমন একটি ঘটনা যা কোনোদিন আগে দেখেননি গ্রামবাসীরা। জীবিত স্ত্রীর ছবি পুড়িয়ে তাঁর শ্রাদ্ধ করলেন স্বামী। কারণ তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে অন্যত্র ঘর বেঁধেছে।
জানা গিয়েছে, এই গ্রামের প্রাক্তন সেনাকর্মী নরেন নায়েকের প্রথম স্ত্রী করোনায় মারা যান। বেশ কিছুদিন একা থাকার পর ফের আরেকজনকে ভালোবেসে দাম্পত্য জীবনে নতুন করে প্রবেশ করেন তিনি। তিন বছর একসঙ্গে কাটানোর পর সেই স্ত্রী যখন আরেকজনের হাত ধরে বেরিয়ে যায় তখন রীতিমতো তাঁর ছবি পুড়িয়ে, পিণ্ডদান ও যাগযজ্ঞ করে জীবনের এই অধ্যায় শেষ করলেন তিনি।
জানা গিয়েছে, তিনবছর আগে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ভালোবাসার সম্পর্ক শুরু হয়। ধলতিথা এলাকার বছর ৩৩-এর একজন মহিলার সঙ্গে নরেনবাবুর আলাপ হয়। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আলাপ জমে যায় প্রেমে। তৈরি হয় ভালোবাসার সম্পর্ক। কিছু কিছু সামাজিক বাধা এলেও শেষপর্যন্ত তাঁরা পরস্পর পরস্পরকে বিয়ে করেন। বছর তিনেক একসঙ্গে সুখে সংসারও করেন। কিন্তু এরপরেই লেগে যায় অশান্তি। নরেনবাবুর অভিযোগ, স্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পুরুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে তা গভীর হতে থাকে। আচমকাই একদিন 'আসছি' বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান স্ত্রী। এদিক ওদিক বিস্তর খোঁজাখুঁজি করেও স্ত্রীর কোনো সন্ধান পাননি তিনি। এরপর একদিন জানতে পারেন তিনি অন্যত্র ঘর বেঁধেছেন।
স্ত্রীর এই আচরণ নরেনবাবুর চোখে 'বিশ্বাসঘাতকতা' হিসেবে ধরা পড়ে। যা তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাই সম্পর্কে ইতি টানতে সামাজিক এবং ধর্মীয় নিয়ম নিয়ম মেনে পুরোহিত ডেকে আয়োজন করেন জীবিত স্ত্রীর 'শ্রাদ্ধ'। স্ত্রীর ছবিতে মালা দিয়ে প্রথমে শ্রদ্ধা জানান এবং পরে সেই ছবি পুড়িয়ে দেন। মাথা ন্যাড়া করে যজ্ঞ ও পিণ্ডদান সম্পন্ন করেন। তাঁর কথায়, 'আমার কাছে স্ত্রী এখন মৃত। যিনি একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছেন এবং আমায় ছেড়ে অন্য কোথাও ঘর বেঁধেছেন তাঁর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আমি রাখতে চাই না। তাই ধর্মমতে তাঁকে বিদায় জানালাম।'
ঘটনার পর নানারকম মন্তব্য শোনা গিয়েছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের মুখে। কেউ কেউ প্রাক্তন এই সেনা কর্মীকে সমর্থন জানিয়েছেন আবার কেউ কেউ অন্য মন্তব্যও করেছেন। তাঁদের কথায়, স্ত্রীর যদি স্বামীর সঙ্গে থাকতে অসুবিধা হয় তবে তাঁকে ছাড়তে দোষ কোথায়! ভারতবর্ষে প্রতিদিন যেমন কেউ না কেউ বিয়ে করছেন পাশাপাশি বিচ্ছেদের ঘটনাও তো একের পর এক ঘটছে। সেখানে তো কোনো দোষ নেই!