• শৈব তীর্থ কৈলাশ ভ্রমণে গিয়ে ভয়াবহ মৃত্যু হুগলির যুবকের, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  •  

    মিল্টন সেন, হুগলি,৬ আগস্ট: সম্প্রতি পূর্ণ অর্জন করতে গিয়ে প্রাণ গেলো হুগলির এক যুবকের। মেঘভাঙা বৃষ্টি আর জমে থাকা বরফ আর অক্সিজেনের অভাব প্রান কেড়ে নিলো যুবকের। সূত্রে জানা গিয়েছে শিব ছিল তাঁর আরাধ্য দেবতা। অথচ সেই শৈব তীর্থ কৈলাশে গিয়েই নিহত হলেন ত্রিবেনীর এক যুবক। মৃত যুবকের নাম রাজীব কুন্ডু(৩৮)। তাঁর বাড়ি মগরা থানার অন্তর্গত ত্রিবেণী বেনীমাধব তলা এলাকায়। 

    শ্রাবন মাস। তাই কিন্নর কৈলাশে মহাদেব দর্শনে গিয়েছিলেন রাজীব। সেখানে গিয়েই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন বাঙালি এই যুবক। চলতি মাসের ১লা অগাস্ট কৈলাশ দর্শনের লক্ষ্যে হিমাচল প্রদেশে রওনা দিয়েছিলেন হুগলির ৫ পর্যটক। মূল উদ্দেশ্য ছিল কৈলাস পর্বতে উঠে শিব দর্শন করা। দুর্গম পাহাড়ে তাঁদের মধ্যে তিনজন সেইমতো পৌঁছে যান। গত মঙ্গলবার দুর্গম রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে মৃত্যু হয় রাজীবের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমাচলের পাহাড়ে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত, জমে থাকা বরফের কনকনে ঠান্ডা পরিবেশের কারণে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রাজীব। একইসঙ্গে দেখা দিয়েছিল তীব্র অক্সিজেনের অভাব। সেই সময়ই তাঁকে নিয়ে আসা হয় স্থানীয় বেস ক্যাম্পে। 

    এরপর সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর মারফত জানা গিয়েছে বুধবার তাঁর ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই উত্তর কাশিতে ভয়াবহ ধস নেমেছে। সেই আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে কিন্নর কৈলাসে। এর কারণেই মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে অনুমান করা হয়েছে। যদিও এই বাঙালি পর্যটকের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, সরকারি তরফে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার কোনও রকম ব্যবস্থা এখনও করা হয়নি । কোনও উদ্যোগ নেই স্থানীয় প্রশাসনের। তাই মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে কাতর আবেদন জানাচ্ছেন রাজিবের পরিবার। 

    জানা গিয়েছে এদিন রাজীবের জামাইবাবু জানিয়েছেন, পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। কোনও রকমে টোটো চালিয়ে সংসার চালায় রাজীব। বাড়িতে মা ও ভাই রয়েছে। তাঁর শখ বলতে একটাই। সেটা বিভিন্ন স্থানে শিবের তীর্থস্থান ঘুরে বেড়ানো। একইভাবে শ্রাবণ মাসের আগেই অমরনাথ ঘুরে এসেছেন যুবক। আর এই শ্রাবণে মাস উপলক্ষে কৈলাশ গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার পথে ঠান্ডা আর শ্বাসকষ্টের কারণে মৃত্যু হয়েছে তিনি জেনেছেন। বর্তমানে রাজিবের পরিবার খুবই অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তাই হিমাচল প্রশাসন এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে তাঁদের কাতর আবেদন রাজীবের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রসঙ্গে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী বলেছেন,'এলাকার যুবকের মৃত্যু হয়েছে কৈলাসে গিয়ে। তাঁর পরিবারের পাশে আমরা আছি। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সবরকম সাহায্যের জন্য থাকব।'
  • Link to this news (আজকাল)