বাড়ি থেকে উদ্ধার মা এবং মেয়ের দেহ, সঙ্কটজনক মেয়ের স্বামী
আনন্দবাজার | ০৯ আগস্ট ২০২৫
বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একই পরিবারের দু’জনের মৃতদেহ। তৃতীয় জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে রাজারহাটের নারায়ণপুর থানারদেবী পার্ক এলাকায়। মৃতদের নাম শিপ্রা রক্ষিত (৭০) ও মহুয়া দে (৪২)। তাঁরা মা-মেয়ে। মহুয়ার স্বামীরঅবস্থা সঙ্কটজনক। পুলিশের ধারণা, তীব্র আর্থিক সঙ্কটের কারণে ওইতিন জন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে দেবী পার্কের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন মহুয়ার স্বামী। তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে ওই পরিবারের কাউকে বাইরে দেখা যায়নি। সাড়াশব্দও মেলেনি। বাড়ির মালিক ও প্রতিবেশীরা অনেক ডাকাডাকি করেও তাঁদের সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে একটি ঘরের ভিতর থেকে মা ও মেয়ে এবং অন্য ঘর থেকে মহুয়ারস্বামীকে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শিপ্রা ও মহুয়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। মহুয়ার স্বামী সেখানে চিকিৎসাধীন। নারায়ণপুর থানার পুলিশ তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধকরেছে।
পুলিশ জেনেছে, ওই পরিবারের বিপুল দেনা হয়ে গিয়েছিল। তাই রাজারহাটের দশদ্রোণ এলাকারবাড়ি, মোটরবাইক-সহ সব কিছু বিক্রি করে দিয়েছিলেন মহুয়ার স্বামী।দেনা কিছুটা শোধ করলেও বাকি ছিল অনেক। পাওনাদারদের হাত থেকে রক্ষা পেতেই দেবী পার্কে বাড়ি ভাড়া নেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেখানেও একাধিক পাওনাদার পৌঁছে যান। পুলিশের ধারণা, তাই শেষমেশ তিন জন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও মহুয়া ও শিপ্রা মহুয়ার স্বামীকে বুঝিয়ে নিরস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে, সেই সব তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
মহুয়ার স্বামী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে অনুমান পুলিশের। তিনি ও তাঁর শাশুড়ি, দু’জনে শারীরিক ভাবেও অসুস্থ ছিলেন।তাই তাঁদের ঘরে ঘুমের এবং রক্তচাপের ওষুধ মজুত থাকত। আত্মহননের উদ্দেশ্যে তিন জন সম্ভবত সেই সব ওষুধই খেয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এটি আদৌ আত্মহত্যার ঘটনা, না কি এর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবে পুলিশ।