• রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্র, টাকা বন্ধই
    আনন্দবাজার | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) প্রকল্পে অনিয়ম নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার ‘সন্তোষজনক’ রিপোর্ট মেলেনি। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে অনিয়ম রোখার ক্ষেত্রে ‘চোখে পড়ার মতো উন্নতি’ নজরে পড়েনি। সেই কারণে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজ ও গ্রামীণ আবাস যোজনায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য অর্থ মঞ্জুর করছে না বলে অর্থ মন্ত্রক জানিয়ে দিল।

    কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ২০২২-২৩ থেকে পশ্চিমবঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণে অর্থ মঞ্জুর করা বন্ধ করে দিয়েছে। চলতি বছর, ২০২৫-২৬-এ এখনও পর্যন্ত কোনও অর্থ মঞ্জুর করা হয়নি। কারণ, এই প্রকল্পে রাজ্যে অনিয়ম-দুর্নীতর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্তরের নজরদারি দল এবং প্রবীণ আধিকারিকদের দল পাঠানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে গত বছর ডিসেম্বরে সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছিলেন, একশো দিনের কাজের প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পশ্চিমবঙ্গে যে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছিল, তা ‘প্রমাণিত’ হয়ে গিয়েছে।সেই সময়ই অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ পাঠিয়েছে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক তা খতিয়ে দেখছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই ফের টাকা দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

    এ বার সংসদে একটি প্রশ্নের উত্তরে অর্থ মন্ত্রক লিখিত ভাবে জানিয়েছে, রাজ্যের থেকে ‘সন্তোষজনক অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ মেলেনি। ২০১৬-১৭ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণে ২৫,৭৯৮ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল। মোট ৪৫ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪২৩টি বাড়ি তৈরির লক্ষ্য ঠিক হয়েছিল। মাত্র ৩৯১টি বাদে বাকি সব বাড়ি তৈরিতে রাজ্য অনুমোদন দিয়েছে। ৩৪ হাজারের বেশি বাড়ি তৈরিও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ২০১৮-র আবাস-প্লাস সমীক্ষা থেকে ২০২২-এ পশ্চিমবঙ্গের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার পরে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। তাতে ‘সন্তোষজনক অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ জমা পড়েনি। তাই এখনও পর্যন্ত অর্থ মঞ্জুরকরা হয়নি।

    ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, এই প্রকল্পের রূপায়ণে অনিয়মের অভিযোগ মেলার পরে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছিল। সেই রিপোর্টে আর্থিক অনিয়ম, বেআইনি কাজের অনুমতি, স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার অভাবের মতো সমস্যা চোখে পড়ে। তা শোধরানোর জন্য রাজ্য সরকারকে বহু বার বার্তা পাঠিয়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। কিন্তু ‘চোখে পড়ার মতো কোনও উন্নতি’ নজরে পড়েনি। তাই ২০২২-এর ৯ মার্চ থেকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দবন্ধ রয়েছে।

    কলকাতা হাই কোর্ট ১ অগস্ট থেকে রাজ্যে ফের একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালুর নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরেও নরেন্দ্র মোদী সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান আদালতকেই জানানো হবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)