জেলার পরে এ বার রাজ্যের পদ পাচ্ছেন না সম্ভাব্য প্রার্থীরা
আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
শুরু হয়েছিল জেলা দিয়ে। এ বার একই নিয়ম বলবৎ রেখে বিজেপির রাজ্য কমিটিতেও সম্ভবত জায়গা হচ্ছে না বিধানসভা নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের। সব ঠিক থাকলে আগামী ১৫ অগস্টের পরে যে কোনও দিন বিজেপির রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়ে যেতে পারে।
গত ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শেষ বার যখন বিজেপির রাজ্য কমিটি গঠন হয়েছিল, তখন একাধিক বিধায়ক রাজ্য কমিটির পদাধিকারী হয়েছিলেন। পরবর্তী কালে জেলা সভাপতি রদবদলের সময়ে মনোজ টিগ্গা, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, তাপসী মণ্ডল, অরূপকুমার দাস-সহ একাধিক বিধায়ক জেলা সভাপতি পদে ছিলেন। কিন্তু চলতি বছরে সাংগঠনিক রদবদলের সময়ে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, কোনও জনপ্রতিনিধি কিংবা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, এমন কেউ জেলা সভাপতি পদে বসবেন না। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের যুক্তি ছিল, সভাপতিকে সাংগঠনিক জেলার ৭টি বিধানসভা এলাকায় দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।তাই তাকে একটি বিধানসভায় আটকে গেলে চলবে না। সূত্রের খবর, রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এই নীতিতেই রাজ্য কমিটিও গঠন করতে ইচ্ছুক। তিনি চান, সাংগঠনিক কাজকর্মের দায়িত্বে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা ৩৬৫ দিন, ২৪ ঘণ্টা সেই কাজই করবেন। যদিও তিনি নিজে রাজ্যসভার সাংসদ। গেরুয়া শিবিরের যুক্তি, রাজ্যসভার সাংসদ সরাসরি জনপ্রতিনিধি নন। তাই তাকে আলাদা করে নিজের কেন্দ্রে সময় দেওয়ার বিষয় থাকে না।
আগের রাজ্য কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মণ, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোরা। কমিটি গঠনের সময়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়ও জনপ্রতিনিধি ছিলেন। পরে তিনি লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হন। এ ছাড়াও রাজ্য সম্পাদক পদে ছিলেন শঙ্কর ঘোষ, গোপালচন্দ্র সাহা, গৌরীশঙ্কর ঘোষ, অশোক দিন্দা, বিমান ঘোষ এবং লক্ষণ ঘড়ুইদের মতো জনপ্রতিনিধিরা। নতুন সূত্র অনুযায়ী, রাজ্য কমিটিতে এঁদের মধ্যে অধিকাংশের বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যাঁরা সাংসদ রয়েছেন, তাঁদের যে হেতু বিধানসভা ভোটে লড়ার আশা কম, তাই তাঁরা স্ব-পদে বহাল থাকতে পারেন। এ ছাড়াও, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও লকেটের বিধানসভা নির্বাচনে লড়া এক প্রকার নিশ্চিত। তাই তাঁদেরও কমিটিতে রাখার সম্ভাবনা কম।
বিজেপির বিভিন্ন মোর্চার সভাপতিদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মানতে চাইছে দল। সে ক্ষেত্রে মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি পদে লকেট ও রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে আলোচনা চললেও শেষ মুহূর্তে তাঁরা দৌড়ের বাইরে চলে গিয়েছেন বলেই একটি সূত্রের খবর। কারণ,এই দু’জনেই আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতির ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, “দক্ষিণপন্থী দলে এ সব নিয়ম মানা কঠিন। সাধারণত বামপন্থী দলগুলিতে এই নিয়ম কঠোর ভাবে মানা হয়। তবে এ বার আমরা সোনালি সময়ের সিপিএমকে অনুসরণ করছি। সংগঠন এবং ভোটের লড়াইকে আলাদা রাখতে চাইছি।”