• দিদি-মোদীর মল্লযুদ্ধ হতে দেবেন না, আর্জি অধীরের
    আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার ‘মোদীর দল’ বা ‘দিদির দল’, যে-ই কেড়ে নিতে আসুক, কংগ্রেস বাধা দেবে। নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী যে ভাবে শিরদাঁড়া সোজা রেখে লড়াই করছেন, তার পাশে বাংলার মানুষকে দাঁড়াতে হবে। কলকাতার বুকতে সভা করে এই ভাবেই কংগ্রেসের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী।

    পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পরিচয়পত্রের দাবিতে এবং বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) নামে বৈধ ভোটারের নাম কেটে দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে যুব কংগ্রেসের শাহিনা জাভেদদের আয়োজনে বুধবার শহরে মিছিলে উপস্থিত ছিলেন অধীর। মিছিল শেষে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের সভায় প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘‘বাংলার মানুষকে বলব, নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান। আগামী নির্বাচনকে আবার মোদী-দিদির মল্লযুদ্ধে পরিণত হতে দেবেন না। মোদী দেশকে লুটছেন, দিদি বাংলাকে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাহুল গান্ধী শিরদাঁড়া সোজা রেখে লড়াই করছেন। যে অন্যায়-অনিয়ম প্রকাশ্যে আনছেন, আগে কেউ করেননি। এই লড়াইয়ের পাশে দাঁড়ান।’’

    অধীর মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে যে ভাবে নিজেদের তাঁবেদারিতে লাগাচ্ছে মোদীর সরকার, এখানে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে একই ভাবে কাজে লাগিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। পঞ্চায়েত, পুরসভায় অবাধে ভোট লুট হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলীয় তদন্ত কমিটি গড়ে, তথ্য ঘেঁটে ভোটার তালিকার অসঙ্গতি প্রকাশ্যে আনছেন রাহুল। কমিশনকে প্রশ্ন করলে বিজেপি নেতারা জবাব দিচ্ছেন! রাজ্যের নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে কিছু বললেও এখানে তৃণমূলের নেতারা সরব হয়েছেন।’’ একই সঙ্গে অধীরের বক্তব্য, ‘‘এসআইআর আগেও হয়েছে। কিন্তু এখন গরিব, সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, কংগ্রেস তার প্রতিবাদ করছে। কমিশনের দায়িত্ব ভোট করানোর। নাগরিকত্ব যাচাইয়ের এক্তিয়ার কি তাদের আছে?’’ মিছিলে ও সভায় এ দিন ছিলেন সৌম্য আইচ রায়, সুমন পাল, রানা রায়চৌধুরীরা।

    তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার অবশ্য বলেন, ‘‘এই প্রশ্ন তুলে অধীরবাবু নিজের দলের তোলা অভিযোগই লঘু করে দিচ্ছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন স্থানীয় নির্বাচন করে কেন্দ্রীয় ভোটার তালিকার ভিত্তিতে। আর আমরা আপত্তি করছি, ভোট-মুখী রাজ্যকে বেছে নিয়ে এসআইআর করার সিদ্ধান্তে।’’

    হরিয়ানার পানিপথে আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে তাঁদের জন্য পরিচয়পত্রের দাবি তুলেছিলেন অধীর। সভা থেকে এ নিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন, জেলা, ব্লক ও থানা উল্লেখ করে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিচয়পত্র দেওয়া হোক। বাইরে গিয়ে তাঁদের হয়রানি তাতে কমতে পারে। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, রাজ্য শ্রম দফতর সেই প্রক্রিয়ায় উদ্যোগী হয়েছে। তবে তৃণমূলের জয়প্রকাশের দাবি, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে কংগ্রেস।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)