আইসার কলকাতার ক্যাম্পাসে ছাত্র-মৃত্যুর পরে পাঁচ দিন পেরোলেও পুলিশি তদন্তে কী মিলল, তা অস্পষ্ট। অনমিত্র রায় নামে ওই গবেষক-পড়ুয়ার যে সতীর্থ এবং গবেষণা সুপারভাইজ়ারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে, বুধবার রাত পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। কথা বলেনি মৃতের পরিবারের সঙ্গেও।
এ দিন অনমিত্রের বাবা তপনকুমার রায় বলেন, “এই তদন্তে সন্তুষ্ট নই। না পুলিশ, না আইসার—কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। আইসার কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত প্রভাবশালী, তাই হয়তো পুলিশ চাপে পড়েছে।” তবে রানাঘাট পুলিশ-জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সিদ্ধার্থ ধাপলার বক্তব্য, “তদন্ত নিয়ম মতোই এগোচ্ছে।”
গত ৭ অগস্ট রাতে নদিয়ার হরিণঘাটায় আইসারের পরীক্ষাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ার আগে, অনমিত্র সমাজমাধ্যমে সতীর্থ সৌরভ বিশ্বাস ও গবেষণা সুপারভাইজ়ার অনিন্দিতা ভদ্রের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। পরদিন কল্যাণী এমসে তাঁর মৃত্যু হয়। সমাজমাধ্যমে অনমিত্রর দাবি ছিল, আইসারের ‘অ্যান্টি-র্যাগিং সেল’-কে বিষয়টি লিখিত জানিয়েও উত্তর পাননি। ঘটনাচক্রে, অনিন্দিতার স্বামী অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ওই সেলের চেয়ারম্যান। তিনি সে পদে ইস্তফা দিয়েছেন।
আইসারের তরফে ইতিমধ্যেই ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’, অতিরিক্ত ‘অ্যান্টি-র্যাগিং সেল’ এবং ‘ইমারজেন্সি অ্যান্ড ক্রাইসিস রেসপন্স কমিটি’ চালু করার কথা জানানো হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার তপনকুমারের আক্ষেপ, “ঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো এ ঘটনা এড়ানো যেত।” তাঁর প্রশ্ন, “এখন এ সব কমিটি গঠন আসলে অভিযুক্তদের আড়াল করার জন্য নয়তো!”
আইসার কলকাতার জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্বতী ভৌমিকের বক্তব্য, “যা করার, কর্তৃপক্ষ তা নিরপেক্ষ ভাবে করছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।” বহু চেষ্টাতেও অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ সূত্রের দাবি, ঘটনার দিন পরীক্ষাগারে আর কারা হাজির ছিলেন, তা জানতে আইসার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অনমিত্রের মোবাইল, ল্যাপটপ পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তাঁর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে।