উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টার: রাখতে হবে নৌকা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী
আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
এই প্রথম ভরা বর্ষায় হতে চলেছে উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। ছাত্রছাত্রীরা বন্যা কবলিত এলাকায় আটকে পড়লে তাদের জন্য নৌকার ব্যবস্থা করার কথা জেলা প্রশাসনকে বলেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তারা এ-ও জানিয়েছে, প্রয়োজনে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও প্রস্তুত রাখতে হবে। সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করছি। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। বড় কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পরীক্ষা পিছোনোর পরিকল্পনা আমাদের নেই।’’
সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে হেতু বর্ষার মধ্যে পরীক্ষা চলবে, তাই এ বারই প্রথম বিকল্প পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। ঘাটাল, আরামবাগ, উদয়নারায়ণপুরের মতো বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে এমন পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচন করার কথা বলা হয়েছে, যেগুলি অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় অবস্থিত এবং যেখানে সহজে বন্যার জল ঢুকবে না। এরই সঙ্গে প্রস্তুত রাখতে হবে বিকল্প পরীক্ষা কেন্দ্রও। শেষ মুহূর্তে কোনও কারণে নির্দিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র বদলাতে হলে পড়ুয়াদের বিকল্প কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। তবে, সংসদ সভাপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বিকল্প পরীক্ষা কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপস করা হবে না। তিনি জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রের জানলা বা দরজা দিয়ে যাতে বৃষ্টির ছাট না আসে কিংবা ছাদ ফুটো হয়ে জল না পড়ে, তা স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। দরকারে এর জন্য প্রয়োজনীয় মেরামতির কাজও করতে হবে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, জলবন্দি হয়ে পড়লে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে কী ভাবে যাবে? চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘দরকার হলে নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে নিতে হবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সাহায্য। আর টানা বৃষ্টি চললে পরীক্ষা শুরুর কয়েক দিন আগে পরীক্ষার্থীদের এমন কোনও জায়গায় এনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, যেখান থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে তাদের অসুবিধা হবে না।’’
যদিও শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, গ্রামীণ এলাকায় বহু স্কুল ভবনের অবস্থা খারাপ। জানলা-দরজা আংশিক ভাঙা। বৃষ্টিতে জানলা ঠিক মতো বন্ধ হয় না। সেগুলি মেরামত করার মতো টাকা স্কুলগুলির নেই। টাকার জন্য বার বার শিক্ষা দফতরকে জানানো হলেও সদর্থক কিছু হয়নি।
অভিভাবকদের একাংশ জানাচ্ছেন, উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা হবে ওএমআর শিটে। পরীক্ষার্থীরা এই প্রথম ওএমআর শিটে পরীক্ষা দেবে। ফলে, তাদের একটা মানসিক চাপ আছে। এর উপরে পরীক্ষা চলাকালীন দুর্যোগ হলে তা ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে আরওচাপের হয়ে দাঁড়াবে। যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, বর্ষা পেরিয়ে তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, তৃতীয় সিমেস্টার দেরিতে শুরু করলে চতুর্থ সিমেস্টারে পঠনপাঠনের সময়কমে যাবে।