একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর চলতি বাদল অধিবেশনের মধ্যেই লোকসভায় দলের নতুন নেতা হিসেবে বেছে নেওয়া হল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের কাজের বিরুদ্ধে বৃহত্তম বিরোধী অভিযানে অনুপস্থিত থাকলেন অভিষেক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই অভিযান নিয়ে সরব হতে দেখা গেল না। বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহল এবংদলের একাংশে।
প্রশ্ন মূলত অভিষেকের অনুপস্থিতি ঘিরে। তিনি শুক্রবারও দিল্লিতে ছিলেন আবার অভিযানের পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার দিল্লি আসেন রাজেন্দ্রপ্রসাদ রোডে দলের নতুন কার্যালয়ে সাংসদদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ-বৈঠক করতে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেও তিনি সংসদীয় কাজকর্মে আরও বেশি করে যোগ দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের প্রায় ৩০০ জন সাংসদের বিক্ষোভ আন্দোলন এবং গ্রেফতারির দিনে অভিষেক তাঁর ক্যামাক স্ট্রিটের অফিস থেকে ভিডিয়ো মাধ্যমে বৈঠক করেন উত্তর দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদের সাংগঠনিককর্তাদের সঙ্গে।
প্রশ্ন উঠছে, ভোটার তালিকা নিবিড় পরিমার্জন বিরোধী আন্দোলনের জাতীয় গুরুত্ব বিবেচনা করে জেলার সাংগঠনিক বৈঠকের দিন বদল করা যেত না?
গত সপ্তাহে রাহুল গান্ধীর বাসভবনে নৈশভোজে গিয়েছিলেন অভিষেক। রাহুল কিছুটা ব্যতিক্রমী ভাবেই গুরুত্ব দিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকে। ‘ভোট চুরি’ রুখতে তাঁর পরামর্শ শুনেছেন, দীর্ঘ ক্ষণ তাঁর পাশে বসে আলোচনা করেছেন, ১ সেপ্টেম্বরে পটনায় তাঁর এবং তেজস্বীর সভায় উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কংগ্রেস এবং তৃণমূলের দীর্ঘদিনের ‘অ্যালার্জি’র পরিসমাপ্তি ঘটল, এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল এরপর। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা একটি মাত্রার পর সর্বোচ্চ স্তরে আর বাড়াতে চাইছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব— কমিশন-বিরোধী কর্মসূচিতে অভিষেকের অনুপস্থিতিতে সেই প্রশ্নও উঠে আসছে।