• এসআইআর স্থগিত চেয়ে আর্জি বঙ্গের
    আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • বিহারের পরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় বিশেষ পরিমার্জন (এসআইআর) শুরু হওয়ার কথা। তার আগেই স্থগিতাদেশের দাবি তুললেন পশ্চিমবঙ্গের আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণন। আজ সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের থেকে রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিশেষ পরিমার্জনের বিষয়ে চিঠি পেয়েছে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই বলে দিয়েছেন, রাজ্য তৈরি। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। এতে স্থগিতাদেশ দিলে পশ্চিমবঙ্গও উপকৃত হবে।

    এই দাবির মুখে আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় পরিমার্জনের বিষয়টি পরে শোনা হবে। বিহারে ভোটার তালিকায় পরিমার্জনের বিরুদ্ধে মামলার শুনানির সময় বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গ এখন অপেক্ষা করতে পারে। এখন তো কিছু হচ্ছে না। তবে পশ্চিমবঙ্গের বিষয়টিও শোনা হবে।

    গত ৫ জুলাই নির্বাচন কমিশনের তরফে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সমস্ত রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে এসআইআর-এর প্রাক্-প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ৮ অগস্ট রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের তরফে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এসআইআর-এর জন্য রাজ্য প্রস্তুত, এমন বার্তা কমিশনকে দেওয়া হয়েছে কি না। আজ সুপ্রিম কোর্টে শঙ্করনারায়ণন জানান, তিনি বিহারের মামলায় অসরকারি সংগঠন এডিআর-এর আইনজীবী। তবে আলাদা ভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও আইনজীবী। এতে বিচারপতিরা জানান, পশ্চিমবঙ্গ এখন অপেক্ষা করতে পারে।

    শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন সরব হন। তিনি অভিযোগ করেন, মঙ্গলবারই তিন জন মহিলা কলকাতা হাই কোর্টের সামনে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “প্রতিটি দাবি এই ভাবে যাচাই করা কঠিন। আমরা সার্বিক নীতিগত ভাবে বিষয়গুলি খতিয়ে দেখব, যা সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই সমান। স্থানীয় প্রেক্ষিতেও দেখা হবে।” কল্যাণ প্রশ্ন তোলেন, ১৯৬০-এর ভোটার নথিভুক্তিকরণ বিধি কী ভাবে নির্বাচন কমিশন অবজ্ঞা করতে পারে। এর আগে তৃণমূলের তরফে ডেরেক ও’ব্রায়েন সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর-এর বিরোধিতায় মামলা করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, তাঁদের সময় এলে পশ্চিমবঙ্গের কথা শোনা হবে।

    সুপ্রিম কোর্ট আজ এসআইআর-এর বিরুদ্ধে মামলাকারীদের কাছে প্রশ্ন তুলেছে, ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে বলা রয়েছে, নির্বাচন কমিশন যে কোনও সময়ে ভোটার তালিকায় বিশেষ পরিমার্জনের নির্দেশ দিতে পারে। কী ভাবে তা হবে, তা বিধিনিয়মে বলা নেই। সে ক্ষেত্রে কমিশনের হাতে নিজের মতো প্রক্রিয়া ঠিক করার ক্ষমতা রয়েছে কি না, এ নিয়ে বৃহস্পতিবার মামলাকারীদের বক্তব্য শোনার পরে কমিশনের বক্তব্য শোনা হবে। বিচারপতিরা বলেছেন, কমিশন এর আগে ভোটারদের যাচাই করার জন্য ৭টি নথির তালিকা দিয়েছিল। এখন তার বদলে ১১টি নথি দিয়েছে। মামলাকারীদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, কমিশন ১১টি নথির তালিকা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে সন্তুষ্ট করতে চাইছে। এই ১১টি নথি বিহারের কত জন মানুষের কাছে রয়েছে, সেটাআসল প্রশ্ন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)