বকেয়া একাধিক কাজ, মসৃণ মেট্রো পরিষেবা নিয়ে বহাল সংশয়
আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
ইস্ট-ওয়েস্ট এবং কলকাতার একাধিক মেট্রো পরিষেবা জনসাধারণের জন্য দ্রুত খুলে দিতে চান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান শহরের মেট্রো প্রকল্পগুলি খুঁটিয়ে পরিদর্শন করার পরে ওই জল্পনা জোরালো হয়েছে। সম্ভাব্য মেট্রোর মধ্যে রয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্লানেড-শিয়ালদহ ছাড়াও নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর এবং রুবি-বেলেঘাটা মেট্রোপথ।
এসপ্লানেড-শিয়ালদহ মেট্রো পরিষেবা খুলে দেওয়ার অনুমতি মিললে হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পুরো পথেই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। ওই পথে পরিষেবা শুরু নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ রয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। তবে এখনই ওই পথে পরিষেবা চালু হলে তা কতটা দক্ষতা এবং নৈপুণ্যের সঙ্গে সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে খোদ মেট্রোর কর্তারাই। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় পুরো পথ জুড়ে গেলে যাত্রী সংখ্যা বিপুল বৃদ্ধি পাবে। সেই চাপ সামাল দিতে ট্রেনের সংখ্যা অনেক বাড়াতে হবে।
ওই মেট্রোয় শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পথে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ট্রেন চালানোর (চালকবিহীন) ব্যবস্থা থাকলেও শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড অংশে সবে ওই নতুন প্রযুক্তির পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বর্তমানে চালু এটিপি (অটোম্যাটিক ট্রেন প্রোটেকশন) ব্যবস্থার তুলনায় চালকবিহীন ব্যবস্থা আরও উন্নত। গত এপ্রিলে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের যে ছাড়পত্র মিলেছে, তাতে চালকবিহীন ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। তবে ওই ব্যবস্থা চালু করার আগে উপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তা যাচাই করাতে হবে। তা ছাড়াও, রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের নতুন করে অনুমতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
বৌবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত সুড়ঙ্গের প্রথম এবং দ্বিতীয় অংশ মেরামত করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হলেও আরও কিছু পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছিল রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের রিপোর্টে। সুড়ঙ্গের ওই অংশে যাতে সামান্যতম বদল ঘটলেও তা ধরা পড়ে, সে দিকে নজর রাখার কথাও বলা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ ওই অংশে প্রয়োজনীয় সেন্সর, ক্যামেরা বসাতে পেশাদার এবং বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে কথা বলছেন। সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
ফলে ওই মেট্রো এখনই উদ্বোধন করা হলে কতটা মসৃণ ভাবে পরিষেবা দেওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আধিকারিকদের বড় অংশেরই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রযুক্তি সম্পর্কে এখনও ধারণা তৈরি হয়নি। উত্তর-দক্ষিণ ছাড়াও শহরের অন্য মেট্রোগুলির তুলনায় ওই মেট্রোর প্রযুক্তি অনেকটাই আলাদা।
হাওড়া স্টেশনের সঙ্গে মেট্রোর মসৃণ যোগাযোগের স্বার্থে সাবওয়ে তৈরি হয়েছে। ওই সাবওয়ে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ঘুরে দেখেছেন। তবে ভিড় নিয়ন্ত্রণে আরও ব্যাপক এবং নিবিড় প্রস্তুতির প্রয়োজন। যা নিয়ে সংশয় রয়েছে। রুবি-বেলেঘাটা মেট্রোপথের ক্ষেত্রেও বেলেঘাটা স্টেশনের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তুলনায় নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোর প্রস্তুতি ভাল। ফলে শেষ পর্যন্ত কোন কোন মেট্রোপথ উদ্বোধন হবে, কিংবা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় এখনও কাটেনি।