কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিন দিন আগে, নার্সের রহস্যমৃত্যুতে ছড়াল চাঞ্চল্য ...
আজকাল | ১৪ আগস্ট ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি: নন্দীগ্রামের মেয়ের সিঙ্গুর নার্সিংহোমে রহস্যমৃত্যু। ছড়াল উত্তেজনা। হল পথ অবরোধ। জানা গেছে, তিন দিন আগে নার্সের কাজে যোগ দিয়েছিলেন ওই তরুণী। বুধবার রাতে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তাঁরা।
জানা গেছে বছর ২৪ এর তরুণীর বাড়ি নন্দীগ্রামে। খবর পেয়ে ভোর রাতে নন্দীগ্রাম থেকে সিঙ্গুরে আসে তরুণীর পরিবারের লোকজন। শ্রীরামপুর চণ্ডীতলা যাওয়ার রাস্তার উপর বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখায় মৃতার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে , হুগলির সিঙ্গুর বোড়াই তেমাথা এলাকায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নন্দীগ্রামের তরুণী তিন দিন আগে নার্সিং এর কাজে যোগ দেন। বুধবার রাতে নার্সিংহোমের চারতলার একটি ঘরে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গত বছর বাঙ্গালোরে জিএনএম নার্সিং করেন ওই তরুণী। এ কথা জানিয়েছেন তাঁর বাবা। জানা গেছে, তিনদিন আগে এক বান্ধবী মারফত সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে চাকরি করতে এসেছিল সে।
মৃতার বাবার অভিযোগ, ‘বুধবার রাত এগারোটা নাগাদ নার্সিংহোম থেকে ফোন করে জানানো হয়, আপনি তাড়াতাড়ি আসুন। আপনার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে। রাত সাড়ে তিনটের সময় গাড়ি ঠিক করে সিঙ্গুরে এসে পৌঁছাই। গেট লাগানো ছিল। গেট খুলে ভেতরে ঢুকি। মেয়ে কোথায় জানতে চাইলে জানানো হয় থানায় নিয়ে চলে গেছে। আমার মেয়ের মৃতদেহ আমাকে না দেখিয়ে কেন থানায় নিয়ে যাওয়া হল? আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। উপযুক্ত তদন্ত চাই। দোষীদের শাস্তি চাই। আমার মেয়ে এখানে নার্সিং করত। তিন দিন হল কাজে যোগ দিয়েছে। গত পরশুদিনও রাত আটটা নাগাদ মেয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তখন সে একদম ঠিকঠাক ছিল।’
নার্সিংহোমে ওই তরুণীর এক বান্ধবী জানান, ‘ওকে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখিনি। তবে কী কারণে এই ঘটনা তা বলতে পারব না। আমি যখন উপরে গিয়েছিলাম তখন দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। জানলা খুলে দেখি গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। এর পরেই আমি সবাইকে বিষয়টি জানাই।’ তরুণীর বান্ধবী জানিয়েছে, ‘রাতে কাউকে না বলে হঠাৎ করে বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল। এরপর গোটা নার্সিংহোমে খোঁজাখুঁজি করি কিন্তু কোথাও দেখতে পাইনি। ফোন করলেও তা বন্ধ ছিল।’ বান্ধবীর দাবি, নার্সিংহোমে কিছু নাকি হয়নি। এদিকে, তরুণীর পরিবার বেসরকারি নার্সিংহোম মালিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছে। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃশানু রায় জানান, ‘একটা অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। লিখিত আকারে অভিযোগ দায়ের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’ ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি করেছে পরিবার ও স্থানীয়রা।