• ছেলেকে হাতেকলমে জালিয়াতি শেখান রামপুরহাটের বিভাস! নকল থানা কাণ্ডে প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য
    প্রতিদিন | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • দেব গোস্বামী, রামপুরহাট: বাবার হাত ধরেই জালিয়াতিতে হাতেখড়ি ছেলের। জালিয়াতির দুনিয়ায় পা রাখা অর্ঘ্যর একাধিক কীর্তি এখন প্রকাশ্যে। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ অনেকের। আর্য মহাসভার সর্বভারতীয় সভাপতি বিভাস অধিকারীর ‘যোগ্য’ ছেলে অর্ঘ্য অধিকারী। আইন বিভাগে স্নাতক। গত রবিবার বাবার সঙ্গেই গ্রেপ্তার অর্ঘ্য। অভিযোগ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার আধিকারিক পরিচয় থেকে শুরু করে ভুয়ো নথি প্রস্তুত ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতারণার জাল বিস্তার সবেতেই তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল।

    অর্ঘ্য নিজেকে পরিচয় দিতেন ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর জাতীয় সম্পাদক, ন্যাশনাল ব্যুরো অফ সোশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস-এর জাতীয় সাধারণ সম্পাদক ও কৃষ্ণপুর টিচার্স ট্রেনিং প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক হিসেবে। বাবার মতোই এলাকায় দাপট দেখাতে তিনি সবসময় চলাফেরা করতেন পাঞ্জাবি ও বিহারী মিলিয়ে ১০-১৫ জন বাউন্সারের ঘেরাটোপে। তাদের মোটা টাকা মাইনে দিতে হত।

    বিশেষ করে কোনও অনুষ্ঠানে গেলে বাউন্সাররা থাকতই। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে প্রভাব খাটাতেন। কয়েক মাস আগে নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগে রামপুরহাট থানায় অভিযোগ হয়। তারপরই নীল বাতি সরিয়ে দেন তিনি। সূত্রের খবর, প্রভাবশালী পরিচয় ও নিরাপত্তা বাহিনীর ছত্রছায়ায় অর্ঘ্য একাধিক ভুয়ো ওয়েবসাইট ব্যবহার করে প্রতারণা চালাতেন।

    প্রসঙ্গত, একসময় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ায় বিভাস অধিকারীর। কুন্তল ঘোষ ও গোপাল দলপতিদের সূত্র ধরে সামনে আসে তার নাম। যদিও দু’জনকেই চেনেন না বলে দাবি করেছিলেন বিভাস। শোনা গিয়েছিল ধর্মীয় কার্যকলাপের যুক্ত বিভাস। নলহাটিতে একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় আশ্রমের শাখা রয়েছে তাঁর দায়িত্বে। যদিও ওই ধর্মীয় আশ্রমের অন্য শাখা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভাসের আশ্রমটি তাঁর ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে কারও কোনও যোগ নেই। তবে এখনও বিভাসের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে রীতিমতো ধন্দ রয়েছে। খাতায় কলমে একসময় তিনি তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিল। মাঝে অবশ্য শোনা গিয়েছিল নলহাটির ব্লক সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। কিন্তু সেই ইস্তফা দলীয় রীতি মেনে হয়নি বলেও খবর। আবার তিনি নিজেই সংবাদমাধ‌্যমকে একবার জানিয়েছেন, বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে খুবই সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। বিভাসের দাবি, নলহাটির আশ্রমে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বেশ কয়েকবার গিয়েছেন। বিভাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পরও কৈলাস বিজয়বর্গীয় তাঁকে দেখতে যান। যদিও তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)