বাবা পরিযায়ী শ্রমিক, সংসারের জোয়াল কাঁধে কলকাতার পথেই মৃত্যু বাসন্তীর সৌম্যর
প্রতিদিন | ১৪ আগস্ট ২০২৫
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: বাবা পরিযায়ী শ্রমিক। তাতেও অভাব পিছু ছাড়েনি। উপার্জনের তাগিদে বাসন্তীর গ্রামের বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় এসেছিলেন সৌম্য মণ্ডল। ডেলিভারি বয়ের কাজ করতেন তিনি। সেই খাবার দিতে যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়েছে যুবকের। খবর বাড়িতে পৌঁছতেই রীতিমতো কান্নার রোল। অর্থের আশায় কলকাতায় না গেলে এই পরিণতি হত না সন্তানের, আক্ষেপ মায়ের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের হিরন্ময়পুর গ্রামের বাসিন্দা যুবক সৌম্য মণ্ডল। বয়স ২৪ বছর। দারিদ্রতা ছিল নিত্যসঙ্গী। সংসারের হাল ধরতে ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন যুবকের বাবা তাপস মণ্ডল। এদিকে উপার্জনের আশায় কলকাতায় ডেলিভারি বয়ের কাজ শুরু করেন সৌম্য। কিন্তু এই কাজই যে কাল হবে, তা ভাবতে পারেননি কেউ। বুধবার বিকেলে সল্টলেক একে ব্লকের কাছে নতুন ব্রিজের কাছে একটি চারচাকা গাড়ি বেপরোয়া গতিতে এসে পরপর দুটো বাইকে ধাক্কা মারে। একটি বাইকে ছিলেন পেশায় ডেলিভারি বয় সৌম্য। ঘাতক গাড়িটি তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় রেলিংয়ের কাছে। রেলিংয়ে আটকে যান যুবক। এদিকে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে গাড়ি। ওই চারচাকা গাড়িতে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে ডেলিভারি বয়কে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলেই জীবন্ত পুড়ে যান তিনি।
খবর বাড়িতে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার। ছুটে আসেন কলকাতায়। ছেলের এই নির্মম পরিণতিতে স্বাভাবিকভাবেই স্তম্ভিত সকলে। উল্লেখ্য, বুধবার এই দুর্ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন সল্টলেকের বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কর্মী যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা না করে ভিডিও করে বলে অভিযোগ ওঠে। তাতেই উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ।