যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে হামলার ঘটনার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিন্দোল মজুমদারকে বুধবার সকালে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। স্পেন থেকে সেখানে নামার পরপরই তাঁকে আটক করা হয়। বর্তমানে তিনি দিল্লি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন এবং ট্রানজিট রিমান্ডের মাধ্যমে কলকাতায় আনার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফার্মেসিতে বি-টেক ডিগ্রি নিয়ে যাদবপুর থেকে পাশ করার পর হিন্দোল বর্তমানে স্পেনে গবেষণার কাজে যুক্ত। বুধবার তিনি স্পেন থেকে দেশে ফেরেন। আগেই তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি থাকায় দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিবাসন দফতরের নজরে পড়েন তিনি। এরপর দিল্লি পুলিশ তাঁকে আটক করে এবং বিষয়টি কলকাতা পুলিশকে জানায়। যাদবপুর থানার এক তদন্তকারী আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশেষ দল ইতিমধ্যে দিল্লিতে পৌঁছে গ্রেফতারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। বৃহস্পতিবার আদালতে তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডের জন্য পেশ করা হবে।
ঘটনাটি ঘটে গত ১ মার্চ। তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অনুষ্ঠান শেষে বেরোনোর সময় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। অভিযোগ, কয়েক দফায় মন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে ধরা হয়, হামলা চালানো হয় এবং গাড়ির কাচ ভাঙচুর হয়। এতে শিক্ষামন্ত্রী আহত হন। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীরা পাল্টা দাবি করে, মন্ত্রীর গাড়ি এক ছাত্রকে ধাক্কা মারে। এই উত্তেজনার মধ্যে ওয়েবকুপার সদস্যদের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় দায়ের হওয়া এফআইআরে হিন্দোল মজুমদারের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। প্রাথমিক তদন্তে তাঁকেই হামলার মূলচক্রী হিসেবে শনাক্ত করে পুলিশ। দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার কারণে তাঁকে ধরা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্পেন থেকে দেশে ফেরার সময় লুকআউট নোটিস কার্যকর হয় এবং দিল্লিতে নামতেই তিনি ধরা পড়েন।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হামলার পরিকল্পনা, অন্য কারও জড়িত থাকার তথ্য এবং ঘটনার নেপথ্যের পূর্ণ বিবরণ জানার চেষ্টা চলছে। তদন্তকারীদের মতে, এই গ্রেফতার মামলার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।