• মাটির বাঁধ ভরসা চরের গ্রামে
    আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • ফুঁসছে পদ্মা, পদ্মার শাখা নদী দিয়ে জল এখন ঢুঁ-মেরেছে চরের গ্রামের দোরগোড়ায়। গ্রামের তিন দিকে থাকা মাটির বাঁধ ভেঙে জল ঢুকলেই ভেসে যাবে গোটা গ্রাম। ফলে এখন আতঙ্কের প্রহর গুনছেন জলঙ্গির চরবাসীরা। চর পরাশপুর ও উদয়নগর খণ্ড চরের বাসিন্দাদের দাবি, যে ভাবে জল বাড়ছে, তা আরো দু-এক দিন বাড়লে বিপদে পড়তে হবে তাঁদের। অভিযোগ, কিন্তু তা নিয়ে প্রশাসন পঞ্চায়েতের বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই। আর তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা চর এলাকার সাধারণ মানুষ।

    তাঁদের দাবি, গ্রাম জলে ভেসে গেলে বস্তায় করে কিছু ত্রাণ নিয়ে প্রশাসন জনপ্রতিনিধি থেকে রাজনৈতিক নেতারা হাজির হবেন চরের গ্রামে। তাতে তাঁদের কিছুই হবে না। কিন্তু এখন যদি তারা একটু উদ্যোগী হত গ্রামটা বেঁচে যেত। তবে সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে না থেকে বুধবার নিজেরাই গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে করেছেন পার বাঁধার কাজ। জেসিবি ট্রাক্টর দিয়ে এ দিন দুপুর থেকে বাঁধে মাটি ফেলার কাজ শুরু করেছেন তাঁরা।

    জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের কবিরুল ইসলাম বলেন, "চরের বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আমি জেলাশাসককে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। বিশেষ করে যাতায়াতের সমস্যাটি। দু'এক দিনের মধ্যেই ওই গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

    সপ্তাহখানেক থেকে পদ্মার জল শাখা নদী দিয়ে পৌঁছে গিয়েছে একেবারে চরের গ্রামের বাঁধের পাশে। প্রতিদিনই ফুঁসে উঠেছে সেই জল। আর তাতেই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে গ্রামে। গ্রামে যাতায়াত করতে গিয়েও এখন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে ফেরি ঘাটে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত ভার বোঝাই নৌকায় করতে হচ্ছে যাতায়াত। গ্রামের অনেক বাসিন্দায় এখন তাদের গবাদি পশু সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন শাখা নদীর ওপারে মূল ভূখণ্ডে। কেউ কেউ বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক কম দামে। পরশপুর চরের বাসিন্দা সানোয়ার মালিথা বলছেন, ‘‘জল যেভাবে ফুঁসছে তাতে যে কোন সময় গ্রামের ভেতরে ঢুকে পড়বে। গবাদি পশুগুলোকে সরিয়ে না রাখলে ওদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হবে আমাদের।’’

    চর পরশপুরের তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী জাব্দুল মণ্ডল বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর ৭৮ বছর কেটে গেলেও আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পেলাম না। দুই যুগ কেটে গেলেও বঞ্চনা থেকেই গেল।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)