• নেকড়ের সংখ্যা বাড়ছে জেলায়
    আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • কাঁকসার গড়জঙ্গল এবং দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের মাধাইগঞ্জ করিডরে ভারতীয় নেকড়ের সংখ্যা বাড়ছে। একটি বন্যপ্রাণ সুরক্ষায় নিয়োজিত সংস্থার গোপন ক্যামেরায় প্রায় ৩০টি নেকড়ের উপস্থিতি ধরা পড়লেও, আসল সংখ্যাটা তার চেয়ে বেশি বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে বন দফতর। তাই এই প্রাণীর জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সব রকম চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে দফতর।

    প্রতি বছর ১৩ অগস্ট আন্তর্জাতিক ‘নেকড়ে দিবস’ পালন করা হয়। বুধবার নেকড়ে সংরক্ষণ নিয়ে কর্মশালা হয় সিটি সেন্টারের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে। বন দফতর সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার’ (ডব্লিউডব্লিউএফ)-এর আর্থিক সহায়তায় বন্যপ্রাণ সুরক্ষায় নিয়োজিত দুর্গাপুরের সংস্থাটি পশ্চিম বর্ধমানে ভারতীয় নেকড়েদের পছন্দের পথ হিসেবে দু’টি করিডর চিহ্নিত করেছে। বছরের শুরুতে সংস্থাটি পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের জঙ্গল এবং কয়লা খনির প্যাচগুলিতে একটি বিশদ জরিপের কাজ করে। লক্ষ্য ছিল, আউশগ্রাম, কাঁকসা, দুর্গাপুর-ফরিদপুর, জামুড়িয়ায় বসতি লাগোয়া বনের গভীরে বাস করা নেকড়েদের অবস্থা খতিয়ে দেখা।

    সংস্থার সম্পাদক অর্কজ্যোতি মুখোপাধ্যায় জানান, জরিপে পাওয়া তথ্যে, কয়েকটি দলে বিভক্ত প্রায় ৩০টি নেকড়ে মাধাইগঞ্জ, গড়জঙ্গল করিডরকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, বনাঞ্চল সঙ্কুচিত হওয়ার পরেও এই এলাকার পরিবেশ নেকড়েদের জন্য অনুকূল রয়েছে। মাধাইগঞ্জ ও জামগড়ার মধ্যে নেকড়ের দলের ঘন ঘন চলাচল লক্ষ্য করা গিয়েছে। মাধাইগঞ্জে দু’টি নেকড়ে শাবকের জন্ম হয়েছে। বসতির কাছে নেকড়েদের আসা আটকাতে মাধাইগঞ্জ ও জামগড়ার দু’টি এলাকায় নেকড়েদের বাধা দেওয়ার যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের তিলাবনি থেকে বাঁশিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১২০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে নেকড়েদের ঘোরাফেরা লক্ষ্য করা গিয়েছে। কালীপুর, রাঙামাটি, ঝাঁঝড়া খনি সংলগ্ন গোপডাঙা প্রভৃতি জায়গায় নেকড়েদের দেখা গিয়েছে।

    দফতরের দাবি, নেকড়েদের প্রকৃত সংখ্যা নথিভুক্ত পরিসংখ্যানের থেকে বেশি হতে পারে। বনকর্মীদের টহলদারি দলের নজরে কাঁকসার গোপালপুর-সহ কয়েকটি নতুন জায়গায় নেকড়ে ধরা পড়েছে। মুখ্য বন সংরক্ষক (দক্ষিণ-পূর্ব চক্র) বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “নেকড়ে সংরক্ষণে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আশপাশের বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। নেকড়ে মূলত বিকেলের পরে বসতি এলাকায় খাবারের খোঁজে ঢোকে। ওই সময়ে কর্মীরা বিশেষ নজর রাখার চেষ্টা করেন।” নেকড়ে সংরক্ষণ প্রকল্পের সুপারভাইজার তথা দফতরের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কল্যাণ দাস বলেন, “ভারতীয় নেকড়ে স্থানীয় ভাবে হেড়োল নামে পরিচিত। এই এলাকায় তাদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)