• লড়াইয়ের নানা দিশা দেখিয়ে নজরে কন্যাশ্রীরা
    আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৫
  • এরা কেউ ভারোত্তালন, কেউ নাচে চ্যাম্পিয়ন। কেউ আবার ক্রিকেটের মাঠে নজর কাড়ছে। কন্যাশ্রী দিবসে জেলার এমনই কয়েক জনকে পুরস্কার দেবে রাজ্য। বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে তাদের সংবর্ধনা জানানো হবে।

    আউশগ্রামের সিলুট বসন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বিন্তী মুর্মু বোলার হিসাবে নাম কেড়েছে। ২০২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মহিলা (অনূর্ধ্ব ১৫) ক্রিকেট দলে যোগ দেয় সে। ২০২৪ সালে মোহনবাগান, পরে বেঙ্গল প্রিমিয়াম লীগে (বিপিএল) টি-২০ তে হাওড়া অ্যাডামাস ওয়ারিয়াস ক্লাবের হয়ে খেলে বিন্তি। এ বছর ক্যালকাটা পুলিশ ক্লাবের হয়ে সিএবির ক্রিকেট লিগেও খেলেছে। বিন্তীর বাবা রবিলাল মুর্মু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি বলেন “ছোট থেকেই ফুটবলের দিকে ঝোঁক ছিল মেয়ের। কিন্তু বাদ সাধল করোনা আর লকডাউন। লকডাউনে টেনিস বল নিয়ে বোলিং করতো। ওর মধ্যে সম্ভাবনা দেখে গুসকরা স্পোর্টিং ক্লাবে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করে দিই।’’ নিয়মিত প্রায় ২০ কিমি রাস্তা যাতায়াত করে গুসকরায় ক্রিকেটে প্রশিক্ষণ নিতে যেত বিন্তী। তবে এখন স্কুলের মাঠেই তার জন্য অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, জানান শিক্ষক সামসুল আলম।

    কাটোয়া শহরের অর্পিতা চৌধুরী একাধিক ভারোত্তালন প্রতিযোগিতায় সাফল্য এনেছে। জাতীয় ও রাজ্য স্তুরের একাধিক প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছে। অনূর্ধ্ব ১৭ ষষ্ঠ ইয়ুথ ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে ৫৫ কেজি ভারোত্তালন প্রতিযোগিতায় সোনা জেতে সে। কাটোয়া বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী বলে, ‘‘এত বড় সম্মান পাব, আমি ভাবতে পারিনি। খেলায় আরও উন্নতি করতে চাই।’’

    মেমারি ১ ব্লকের সমৃদ্ধি চৌধুরী ২০২২ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১২ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ৬৪ কেজির বিভাগে সোনা জেতে। ছ’শো মিটার দৌড় প্রতিযোগিতাতেও সোনা জেতে। এ বছর মুম্বইয়ে একটি আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতাতেও প্রথম হয়। মঙ্গলকোটের ঋত্বিকা চৌধুরী উন্নতি আন্তর্জাতিক নৃত্য প্রতিযোগিতায় ২০২৩ সালে রবীন্দ্র নৃত্যে তৃতীয় হয়। ওড়িশায় নৃত্য মহোৎসবে পুরস্কার পায়। অসমে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাতেও পুরস্কার জেতে। এ দিন সম্মানিতহবে তারাও।

    রায়না ১ ব্লকের শ্রেয়সী সোম নানা স্কুলে আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণের পথিকৃৎ। সর্বশিক্ষা মিশনের মাধ্যমে মেয়েদের ক্ষমতায়নের প্রচার করেন রাজ্য ও জাতীয় স্তুরে ক্যারাটেতে একাধিক পুরস্কার পাওয়া এই মেয়ে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করে এখন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিদেশী ভাষায় সার্টিফিকেট কোর্স করছেন তিনি।

    শুধু লেখাপড়া নয়, খেলাধুলো, শিল্পসত্ত্বাও যে জীবনে চলার পথে সম্বল হতে পারে, বোঝাচ্ছে এই মেয়েরা। পাঁচ কন্যার এই পথ চলা পূর্ব বর্ধমান জেলার তো বটেই, অন্যদেরও পাথেয় হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)