ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের মামলা নিয়ে আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হতে পারে। এই মামলাটি শীর্ষ আদালত প্রায় এক মাস পিছিয়ে দিয়েছিল। বলা হয়েছিল, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি মামলার শুনানি হতে পারে। কিন্তু বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আবার সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য সরকার। জানানো হয়, ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অনেক কাজ আটকে রয়েছে। দ্রুত এর শুনানি প্রয়োজন। এর পরেই সন্ধ্যায় জানা যায়, এই মামলা আগামী সোমবার শুনতে পারে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চ।
২০২৪ সালের ২২ মে ওবিসি নিয়ে প্রথম রায় দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বলা হয়েছিল, ২০১০ সালের পর রাজ্যের তালিকায় যত ওবিসি সম্প্রদায় যুক্ত হয়েছে, তা বাতিল। ২০১০ সালের পর থেকে জারি করা সমস্ত ওবিসি শংসাপত্রও বাতিল করে দেওয়া হয়। তার আগে রাজ্যে ওবিসি হিসাবে ৬৬টি সম্প্রদায় স্বীকৃত ছিল। বলা হয়, সামাজিক, আর্থিক এবং পেশাগত ভাবে সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমীক্ষা করে নতুন করে ওবিসি তালিকা প্রকাশ করতে হবে রাজ্যকে। সেই অনুযায়ী রাজ্য একটি সমীক্ষা করে ওবিসি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধেও হাই কোর্টে মামলা হয়। গত ১৭ জুন এই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের বিজ্ঞপ্তির উপরে স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। রাজ্য উচ্চ আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায়। গত ২৮ জুলাই ওবিসি শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
ওবিসি শংসাপত্রের জটিলতার কারণে অনেক সমস্যা হচ্ছে। কিছু দিন আগে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওবিসি জটিলতার কারণে তা করা যায়নি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ জয়েন্টের মেধাতালিকা বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বোর্ডকে নতুন করে মেধাতালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছিল। আদালত জানিয়েছিল, পড়ুয়াদের জন্য পূর্বের মতো ৭ শতাংশ সংরক্ষণই বরাদ্দ রাখতে হবে। নতুন তালিকা মেনে নয়, পুরনো ৬৬টি সম্প্রদায়ের বিধি মেনেই মেধাতালিকা প্রস্তুত করতে হবে। রাজ্য হাই কোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেও শীর্ষ আদালতে যায়। মনে করা হচ্ছে, ওবিসি-র মূল মামলার শুনানি হলে জয়েন্টের মেধাতালিকা সংক্রান্ত মামলাটি তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে।
গত সোমবার, ১১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে মামলাটি ওঠেনি। পরে মঙ্গলবারও শীর্ষ আদালতের তালিকায় এই মামলাটি না-থাকায় রাজ্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তখন জানিয়ে দেওয়া হয়, ৯ সেপ্টেম্বর শুনানি হবে। পরে রাজ্যের তরফে আবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।