মিল্টন সেন, হুগলি: রাস্তায় আলু ছড়িয়ে, পা দিয়ে মাড়িয়ে বিজেপির বিভ্রান্তিকর কর্মসূচির প্রতিবাদ করল 'জমি আন্দোলনের ধাত্রীভূমি' সিঙ্গুরের মানুষ। সিঙ্গুরে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সিঙ্গুর রতনপুর আলুর মোড়ে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
বুধবার সিঙ্গুরের রতনপুর মোড়ে আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে সভা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সিঙ্গুরের আলু চাষিদের প্রতি রাজ্য সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে বিজেপির কৃষান মোর্চার ডাকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয় সিঙ্গুরের রতনপুর মোড় এলাকায়। তৈরি হয় অবস্থান মঞ্চ। চারিদিকে লাগানো হয় বিজেপির পতাকা। আর তার আগেই 'অবিলম্বে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে রাসায়নিক সারের দাম কমাতে হবে' এই দাবি তুলে সিঙ্গুরে শুভেন্দু অধিকারির সভাস্থলের আশেপাশে ব্যানার লাগিয়ে রেখেছিল সিঙ্গুর ব্লক কিষান ক্ষেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি। সেখানে রাসায়নিক সারের দাম কমানোর দাবি জানানোর পাশাপাশি তুলে ধরা হয় ভিন রাজ্যে আলুর দাম। সিঙ্গুর ব্লক ২ নম্বর আঞ্চলিক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি কার্তিক চন্দ্র মাঝি দাবি করেছেন, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের সারের দাম কমানো উচিত। পাশাপাশি এরাজ্যের তুলনায় বিজেপি শাসিত রাজ্যে আলুর বাজার দর অনেক বেশি।
ওই সভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, গত ফেব্রুয়ারী মাসে সরকারি দর নির্ধারন করে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিল, এবছর আলু কেনা হবে।সেই আলু কেনা হয়নি। চাষীরা আলুর দাম পাচ্ছেন না। তাই সেই বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা আদালতে যান।' তার পরই আলু ছড়িয়ে আন্দোলনের কথা বলেন। সঙ্গে সঙ্গেই বস্তা খুলে বৈদ্যবাটি তারকেশ্বর রোডের উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয় আলু। রাস্তায় ছড়িয়ে দেওয়া আলুর উপর উঠে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।
বিজেপির সেই কর্মসূচির প্রতিবাদ ওই একই জায়গায় এই দিন এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। শুভেন্দু অধিকারী আলু দাম বৃদ্ধির দাবি নিয়ে সভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে কটাক্ষ করে অনেক কথা বলেছেন। এ দিন রাস্তায় আলু ঢেলে পা-দিয়ে মাড়ানো-র প্রতিবাদে হাজার হাজার সিঙ্গুরের জনগণের সামনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, বেচারাম মান্না, বিধায়ক অরিন্দম গুঁই, বিধায়ক করবী মান্না, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া-সহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।