তিনদিন পরে ভারতে যুক্ত হওয়া মালদহে উন্মাদনা তেরঙ্গা সামগ্রী ঘিরে
বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৫
সৌম্য দে সরকার মালদহ
ভারত মানেই তেরঙ্গা পতাকা। ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে তাই এই তেরঙ্গাই মেতেছে মালদহ। ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকার রঙে নিজেদের পোশাক থেকে পাগড়ি কিনতে মানুষের উন্মাদনাই বুঝিয়ে দিয়েছে স্বাধীনিতা দিবস আসলে এক আবেগের নাম। মালদহের ক্ষেত্রে এই আবেগের ঘনত্ব আরও খানিকটা গাঢ়। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট সারা ভারতে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা উড়লেও মালদহের জেলা প্রশাসনিক ভবনে উত্তোলিত হয়েছিল পাকিস্তানের চাঁদতারা খচিত পতাকা। তীব্র ক্ষোভ আর প্রবল জনমতের চাপে তিনদিন পরে ফের ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল মালদহ। স্বাভাবিক ভাবেই তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা নিয়ে মালদহবাসীর এই অপরিসীম আবেগ।
স্বাধীনতা দিবসের প্রায় দু’সপ্তাহ আগে থেকে মালদহ শহর সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় বসেছে জাতীয় পতাকা সহ ত্রিবর্ণ রঞ্জিত বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা। তাতে রয়েছে টুপি, ওড়না, পাগড়ি, গাউন, মিনি ব্যাটারি চালিত ফ্যান সহ আরও অনেক কিছুই।
বিক্রেতাদের মুখে চওড়া হাসি। সে লাভবান হওয়ার তৃপ্তির পাশাপাশি রয়েছে স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে স্পেশাল এই দিনটি পালনের শরিক হওয়ার আনন্দ।
ইংলিশবাজার শহরের দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন পুর বাজারের এক বিক্রেতা বাবাই সরকার বলেন, বিভিন্ন মাপের জাতীয় পতাকা রয়েছে। ৫০ থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে মানুষ কিনছেন ছোট থেকে বড় বিভিন্ন মাপের জাতীয় পতাকা।
এছাড়াও জাতীয় পতাকার রঙের টুপি প্রতিটি ৫০ টাকা, মেয়েদের ওড়না ১০০ টাকা, পাগড়ি ২০০ টাকা, মেয়েদের গাউন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা করে।
গেরুয়া সাদা সবুজ রঙের পাখা যুক্ত ব্যাটারি চালিত ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে। এক বিক্রেতা বলেন, সবচেয়ে আশ্চর্যের হচ্ছে অনেক ক্রেতাই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা কিনতে গিয়ে দরাদরি করছেন না! তাঁরা বলছেন, জাতীয় পতাকা নিয়ে দরাদরি হয় না।
ব্যবসায়ী উজ্জ্বল সরকার বলেন, এই প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছেও কেন জানি না স্বাধীনতা দিবসে এক অদ্ভূত ভাবাবেগে বিহ্বল হয়ে পড়ি। গর্ব বোধ করি ভারতবর্ষের নাগরিক হিসাবে। পুনরায় জন্ম নিলে আবার এই দেশেই জন্মাতে চাই।
এই ভাবাবেগ সঞ্চারিত পরবর্তী প্রজন্মেও। সদ্য স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে ফেলা মেঘদ্যুতি সিংহ বলেন, নিজেকে ভারতবাসী হিসাবে স্পেশাল বোধ করি। একথা ঠিকই আমাদের দেশে হয়তো পাশ্চাত্যের দেশগুলির মতো সব বিলাস ব্যসনের বন্দোবস্ত নেই, কিন্তু আমাদের দেশের যা রয়েছে তা পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। আমাদের গর্ব আমাদের দেশ!