মালদহ কোর্ট স্টেশনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নেতাজির নাম
বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৫
মঙ্গল ঘোষ, পুরাতন মালদহ: স্বাধীনতা দিবসের দিনটি এলেই মালদহবাসীর মনে পড়ে যায় নেতাজি ও মালদহ কোর্ট স্টেশনের কথা। স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন মালদহ কোর্ট স্টেশন। ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত নানা ঘটনার সাক্ষী মালদহ জেলার এই রেল স্টেশনটি। তখন ১৯০৪ সাল, দেশজুড়ে ব্রিটিশ শাসন চলছে। সেসময় পুরাতন মালদহ শহরের মালদহ কোর্ট স্টেশনের যাত্রা শুরু। তখন জেলার ইংলিশবাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় রেল ব্যবস্থা তেমন উন্নতি হয়নি। এমনকী জেলা সদরে কোথাও রেল স্টেশন ছিল না। মালদহ কোর্ট স্টেশনটি ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের (ইবিআর) অধীনে ছিল। সেসময় লোহা এবং কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি একটি বসার জায়গা কোর্ট স্টেশন চত্বরে ছিল। যা এখন স্টেশনের অফিস ঘরে স্মৃতি হিসাবে রেখে দেওয়া হয়েছে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে মালদহ কোর্ট স্টেশন থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলত। ট্রেনগুলি সীমান্তবর্তী হবিবপুরের সিঙ্গাবাদ হয়ে বাংলাদেশের ঢাকা চলে যেত। অবিভক্ত দেশে ঢাকা থেকে ট্রেনে অনায়াসে কলকাতা যাওয়ার রুট ছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই রুট ব্যবহার করতেন। স্থানীয় প্রবীণরা বলছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মালদহ কোর্ট স্টেশন দিয়ে গিয়েছিলেন। স্বদেশী আন্দোলনের মুখ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও কোর্ট স্টেশনে এসেছিলেন। রাতে কিছুক্ষণের জন্য স্টেশনে বিশ্রাম নিয়েছিলেন।
এলাকার মানুষ সেই স্মৃতিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে কোর্ট স্টেশন চত্বরে নেতাজির মূর্তি বসানোর দাবি তুলেছেন। মালদহ কোর্ট স্টেশনের ম্যানেজার প্রদীপকুমার রায় বলেন, ইংরেজ আমলে কোর্ট স্টেশন তৈরি হয়েছে। জেলার সবচেয়ে পুরনো স্টেশন এটি। কোর্ট স্টেশনের সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। শুনেছি, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এই স্টেশনে স্বয়ং নেতাজি এসেছিলেন। কবিগুরুও এসেছিলেন।
মালদহ জেলার মধ্যে পুরাতন মালদহ শহর বেশ প্রাচীন। ব্রিটিশ আমলে মহানন্দা নদীপথ দিয়ে বাণিজ্য হতো। মহানন্দার পাশে সদরঘাট থেকে মাত্র ২ কিমি দূরে মালদহ কোর্ট স্টেশন। একদশক আগেও কোর্ট স্টেশনটি ‘মৃতপ্রায়’ হয়ে ছিল। এখন অবশ্য ধাপে ধাপে সংস্কার করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই স্টেশনটির।