• মাঝরাস্তায় বিরাট দুর্ঘটনার কবলে পূণ্যার্থী বোঝাই বাস, মুহূর্তে রক্তে ভেসে গেল চারদিক, ছড়িয়ে ছিটিয়ে অন্তত দশজনের দেহ...
    আজকাল | ১৫ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসের সকালে মর্মান্তিক, ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে অন্তত দশ জনের। আহত বহু। তাঁদের উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে।

    প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের নলা ফেরিঘাটে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। পূণ্যার্থী বোঝাই ওই বাসটি আচমকা দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে ধাক্কা মারে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাসযাত্রীরা সকলেই বিহারের বাসিন্দা। তাঁরা গঙ্গাসাগরে স্নান শেষে ফিরছিলেন। বাসে ৫ জন শিশু-সহ ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে দশ জনের। 

    এএসপি অর্ক ভট্টাচার্য ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, 'ভলভোর সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা হয়। খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ৪৫ জন বা তার বেশি যাঁরা আহত হয়েছিলেন, তাঁদের পাঠানো হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে।' 

    ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের সুপার তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, 'বাস দুর্ঘটনার ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, তীর্থযাত্রীরা গঙ্গাসাগর থেকে স্নান করে ভলভো বাসে ফিরছিলেন। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল, ঘটনাস্থলেই দশজনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে দু' জন মহিলা, আটজন পুরুষ। তাছাড়াও ২৫ জন আহত অবস্থায় এসেছেন হাসপাতালে। চার-পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সকলের চিকিৎসা চলছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়েছে। যাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক, আরও কিছুটা সময় পেরোলে পরিস্থিতি বোঝা যাবে, আহতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। তবে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।' 

    ঘটনা প্রসঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পূণ্যার্থী বোঝাই বাস ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা, আশেপাশের গ্রামের লোকজন উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। মৃতিদেহগুলি উদ্ধার করেন তাঁরা।  স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেক সময় রাস্তায় অবৈধভাবে লরি-ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। তা নিয়েই ক্ষভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। দাবি, অবৈধভাবে লরি-ট্রাক পার্কিং-এর জায়গা ছাড়া অন্যত্র অকারণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণেই অহরহ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। ট্রাকে ধাক্কা কীভাবে? প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, হয়তো রাতভর চলার কারণে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন চালক। কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। 

    ঘটনাপ্রসঙ্গে জেলাশাসক জানিয়েছেন, ঘটনায় ছ' জন শিশু আহত। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় আঘাত লেগেছে। মৃতদের ময়নাতদন্তের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেহ পৌঁছে দেওয়া হবে পরিবারের কাছে। জেলাশাসক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বাসের চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। 

    আহতদের খোঁজ নিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি জানান, 'মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নলার বাস দুর্ঘটনার নিহতদের দেহ রাজ্য সরকারের তরফে তাদের বাড়ি বিহারের মোতিহারি জেলায় পৌঁছে দেবে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও আহতদের দ্রুত চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হবে।' তিনি আরও জানান, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার,সভাধিপতি অসকলেই ঘটনাটি দেখভাল করছেন। হাসপাতালের সুপার হয়েছেন, পরিদর্শন করছেন গোটা ঘটনাটি। 
  • Link to this news (আজকাল)