পতাকার দন্ড ছোঁয়া মাত্রই ছোবল মারল বিদ্যুৎ, মুহূর্তেই মৃত্যু হল শিক্ষকের,অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন সকলে...
আজকাল | ১৫ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসে পতাকা তোলার জন্য দন্ড বসাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক শিক্ষকের। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া থানার মল্লিকপুরে। একটি বেসরকারি স্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। মৃত শিক্ষক মনোয়ার হোসেন (৬২) হাড়োয়া থানার বকজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝিকরা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ১৫ আগস্টের সকালে স্কুলে পতাকা উত্তোলন করার জন্য একটি লোহার পাইপ বসানো হয়েছিল।
সেই পাইপের উপর দিয়ে গিয়েছে হাই ভোল্টেজ বিদ্যুতের তার। এদিন সকালে পাইপটি ঠিকঠাক করার সময় অসাবধানতাবশত পাইপের সঙ্গে ওই তারটির সংযোগ হয়ে যায়। মুহূর্তে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যান শিক্ষক মানোয়ার হোসেন। সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। তাঁরা প্রথমে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। এরপর সম্বিত ফিরতেই ছুটে এসে তড়িঘড়ি ওই শিক্ষককে কোনোমতে উদ্ধার করে তাঁকে নিয়ে যান স্থানীয় হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওই শিক্ষককে পরীক্ষা করে জানান তিনি মৃত। পুলিশের কাছে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে দেহটি বসিরহাট পুলিশ জেলার হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়।
ঘটনার পর এলাকা জুড়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য। এরকম একটা দিনে আনন্দের মুহূর্তে এইরকম বিষাদ নেমে আসবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। তাঁরা মনে করছেন স্রেফ অসাবধানতাই এই মৃত্যু ডেকে নিয়ে এল। মৃত মনোয়ার হোসেনের ভাই আরাবুল ইসলাম বলেন, তাঁর দাদা একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতার দায়িত্বে ছিলেন। শুক্রবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিনি সকাল ছ'টা নাগাদ স্কুলে গিয়ে স্কুলের সামনে পতাকা উত্তোলন করার জন্য একটি লোহার পাইপ বসাচ্ছিলেন। কাজ করতে গিয়ে মনোয়ার খেয়াল করেননি তাঁর মাথার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে হাইভোল্টেজ বিদ্যুতের তার।
অসাবধানতাবশত সেই তারের সঙ্গে লোহার খুঁটির স্পর্শ হতেই খুঁটির ভিতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। যার জেরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন মনোয়ার। আরাবুলের কথায়, 'এরকম একটি বিশেষ দিনে যে এই ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে তা আমাদের কল্পনাতেও আসেনি। আমরা পরিবারের সকলেই অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে পড়েছি।' গ্রামবাসীরাও জানিয়েছেন, তাঁরাও এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। স্বাধীনতা দিবসের সকালে এরকম একটি ঘটনা যে ঘটবে তা সকলের কাছেই ছিল কল্পনাতীত। তাঁদের কথায়, ওই শিক্ষক খুবই উৎসাহী ছিলেন এই বিষয়গুলি নিয়ে। যতটুকু তাঁদের চোখে পড়েছে সেই অনুযায়ী মনোয়ার নিজে থেকেই এই উৎসবগুলিতে এগিয়ে আসতেন। সবকিছু জোগাড় করতেন। এরপর মেতে উঠতেন সকলকে নিয়ে। ফলে এরকম একজন শিক্ষকের মৃত্যুতে তাঁরা সকলেই শোকস্তব্ধ।