রক্ত দিয়ে বিচারের দাবি, স্বাধীনতা দিবসে পুরুলিয়া জেলাশাসকের দপ্তরে আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যবসায়ীর!
প্রতিদিন | ১৫ আগস্ট ২০২৫
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন পুরুলিয়ায় জেলাশাসকের দপ্তর চত্বরে এক শিল্পপতির আত্মহত্যার চেষ্টা। অনুষ্ঠান চলাকালীন হঠাৎই জেলাশাসক দপ্তরে আসেন শিল্পপতি দীনেশ আগরওয়াল। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ব্লেড দিয়ে নিজের শরীরকে রক্তাক্ত করেন ওই ব্যক্তি। যদিও কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা কোনওরকমে দীনেশকে ধরে ফেলেন এবং দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। অন্যদিকে ঘটনার খবর পেয়েই ছুটে আসেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। কীভাবে এবং কেন এই ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়, যদিও পুলিশের তরফে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর বাড়ানো হয়েছে দপ্তরের নিরাপত্তাও।
দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। সেই মতো সকাল থেকে পুরুলিয়ায় জেলাশাসকের দপ্তরে ছিল চরম ব্যস্ততা। সবার নজর এড়িয়ে সেখানে পৌঁছে যান দীনেশ আগরওয়াল। এরপরেই এই ঘটনা। যা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে জেলাশাসকের দপ্তর চত্বরে। জানা যায়, হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফের জেলাশাসক দপ্তরে গিয়ে হাজির হন ওই শিল্পপতি।
ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ”জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাঁর নিজস্ব জমি অবৈধভাবে ‘ভেস্টেড’ জমি হিসেবে রেকর্ড করানো হয়েছে। এতে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।” এই প্রসঙ্গে তাঁর আর দাবি, এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে একাধিকবার জেলাশাসকের দপ্তরে আসেন। জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বারবার ব্যর্থ হন। আর সেই কারণে কার্যত একপ্রকার বাধ্য হয়েই স্বাধীনতা দিবসের দিনই জেলাশাসক দপ্তরে এসে রক্ত দিয়ে বিচার চাওয়া, বলে দাবি ওই ব্যক্তির।
বলে রাখা প্রয়োজন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশকে অমান্য করেই পুরুলিয়ায় জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগ। সম্প্রতি আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই ওরাং জনজাতির প্রায় ৯০ ডেসিমেল জমি এলাকার প্রোমোটারের হাতে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। আর সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের বেশ কিছু কর্মী জড়িত। কার্যত তাদের কারসাজিতে ঘটছে এই কেলেঙ্কারি। যদিও এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ আছে, ”কোনওভাবেই যাতে আদিবাসীদের জমি বেনিয়মের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষজনের হাতে না যায়”।
সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসে এসেও এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে কড়া বার্তা দেন প্রশাসনিক প্রধান। কিন্তু আদৌও তা যে মানা হচ্ছে না এদিনের ঘটনায় তা স্পষ্ট।