শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: পথ কুকুর নিয়ে সুপ্রিম নির্দেশে তোলপাড় দেশ। এরমধ্যেই ১৩ টি কুকুর মেরে কাঠগড়ায় দুলাল দাস। ইতিমধ্যে স্থানীয় কোতোয়ালি থানায় অভিযুক্তের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ দায়ের হতেই ফেরার তিনি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির মোহিতনগর এলাকায়। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই চরম ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষজন। অভিযুক্ত দুলাল দাসের গ্রেফতারের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। এমনকী স্থানীয় পশুপ্রেমী সংগঠনগুলিও কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গত কয়েক আগে চা শ্রমিক দুলাল দাসের একটি ছাগলকে এলাকারই একটি কুকুর কামড়ে মেরে ফেলে। এরপরেই ‘বদলা’ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে অভিযুক্ত দুলাল। জানা যায়, মৃত ছাগলের শরীরের কীটনাশক মিশিয়ে তা স্থানীয় কুকুরদের খেতে দেয়। তা খেয়ে এলাকার সবথেকে বিশ্বস্ত ও শিকারি কুকুর হিসেবে পরিচিত ভুটু সহ ১৩টি কুকুর মারা যায়। স্থানীয়দের দাবি, মৃত ছাগলের শরীরে মেশানো বিষ খেয়ে এলাকার আরও বেশ কয়েকটি কুকুর অসুস্থ। এলাকার মানুষজনই অসুস্থ কুকুরগুলির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। এই কাজে এগিয়ে এসেছেন একাধিক পশুপ্রেমীও। সবরকমভাবে সাহায্য করছেন তাঁরা।
তবে গ্রামের মানুষের আক্ষেপ একটাই, ভুটুকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তাঁদের কথায়, ভুটুই একদিন চিতাবাঘের হামলার মুখ থেকে গ্রামের মানুষ রক্ষা করেছিল। ফলে ভুটু সহ এলাকার ১৩ টি কুকুরের ‘খুনে’র ঘটনায় একেবারে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার মানুষজন। পুলিশ জানিয়েছে, কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত দুলাল দাস। তাঁর খোঁজ চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি মৃত কুকুরের দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
তবে এই ঘটনায় অন্য এক আশঙ্কা কথা জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের কথায়, বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল থেকে প্রচুর সংখ্যায় ময়ূর এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। বিষক্রিয়ায় সেই সমস্ত ময়ূরগুলির ক্ষতি হতে পারে। এই বিষয়ে প্রশাসন যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় সেই আবেদন জানিয়েছেন এলাকার পরিবেশবিদরা। বলে রাখা প্রয়োজন, গত কয়েকদিন আগেই পথ কুকুর নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, দিল্লি-এনসিআর এলাকার সমস্ত পথকুকুরকে অবিলম্বে ধরতে হবে। একই সঙ্গে নির্বীজকরণ করিয়ে সেগুলিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাতে হবে বলেও নির্দেশ। যা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।