• রেড রোডে কুচকাওয়াজের মধ্যেই অসুস্থ ৩৯ পড়ুয়া, হাসপাতালে ছুটলেন মমতা, বললেন, ‘আদর করে দিয়েছি’...
    আজকাল | ১৬ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুক্রবার রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েকজন পড়ুয়া। তাদের তড়িঘড়ি ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। খবর পেয়েই সোজা হাসপাতালে ছোটেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সব পড়ুয়াদের সঙ্গেই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী, আদর করে দেন। হাসপাতাল দেখে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। জানান, ‘গরমে একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। সকালে জলখাবার দেওয়া হয়েছিল সবাইকে। কিন্তু প্রোগ্রামের আগে অনেকে টেনশনে ছিল। সে কারণে অনেকে খাবারটা খায়নি। খিদেও পেয়েছিল বলে ডিহাইড্রেশন হয়ে গিয়েছিল অনেকে। এটা সাইকোলজিক্যাল, যখনই একজনকে দেখেছে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, বাকিরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি সবাইকে দেখে আদর করে, জল-মিষ্টি খাইয়ে এসেছি। সকলেই এখন ঠিক আছে। ওদের লাঞ্চ করিয়ে যারা সুস্থ আছে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। ফতেমা শেখাওয়াত বলে একটি মেয়ে কিছুটা অসুস্থ ছিল, এখন মোটামুটি ঠিক আছে’।

    এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আপাতত সবাইকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তারপর পরিস্থিতি বুঝে একে একে সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে’। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওরা ৩৯ জন ছিল, একজন একটু টেনশন করছিল। একজনকে যেই দেখেছে, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে’। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ফতেমা শেখাওয়াত নামে এক পড়ুয়াকে বর্তমানে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে, শিক্ষকরা রয়েছেন। হাসপাতালের তরফে সকলকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। উল্লেখ্য, এদিন ধনধান্য স্টেডিয়ামে নিজের লেখা কবিতাও পাঠ করেন মমতা। বারেবারে যেমন তাঁর জমানার প্রকল্প কীভাবে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে দিচ্ছে কয়েক কদম তা বলেন, তেমনই নানা দিকের কথা তুলে ধরেন বক্তব্যে।  বলেন নেদারল্যান্ডে ইউনাইটেড নেশনসের ফোরামে দাঁড়িয়ে থাকার আবেগঘন মুহূর্তের কথা।

    মেয়েরা সমাজে কী করতে পারে, সেকথা বলতে গিয়ে সমাজের নানা  খাতে মহিলাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, 'আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ২০১১ সালের পর থেকে, প্রাথমিক শিক্ষায় ২০১১-১২-তে মেয়েদের স্কুলছুটের হার ছিল পৌণে পাঁচ শতাংশ, আজ তা শূন্য। সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ বর্ষে মেয়েদের স্কুলছুটের হার ছিল ১৬.৩২ শতাংশ, ২০২৩-২৪-এ তা হয়েছে ২.৯ শতাংশ। হায়ার সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ বর্ষে মেয়েদের  স্কুলছুটের হার ছিল ১৫.৪১ শতাংশ, চলতি শিক্ষা বর্ষে তা ৩.১৭ শতাংশ। এটা কি গর্ব করার বিষয় নয়?' এই  সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে রাজ্যের নানা জেলার, নানা স্থানের কিশোরী, যুবতীরা যেভাবে উপকৃত হচ্ছেন, সেকথা বলতে নিয়ে নিজের ছোটবেলার পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন।

    বলেন, সেই সময়ের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেন এখনকার পড়ুয়াদের যেতে না হয়। বাবা-মায়েদের উদ্দেশে বলেন, 'আমি অনুরোধ করব, আপনারা মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেবেন না। তারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়ে নিতে পারে। তাদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে দিন। তাদের আত্মনির্ভর হতে দিন। যখন সে  ১৮ বছর পূর্ণ করছে তখন সে ২৫ হাজার টাকা পাচ্ছে, সেই টাকা ব্যাঙ্কে রেখে দিন। একজন ছোট্ট বন্ধু এসে বলে গেল সে একটা বেকারি  করেছে। মেয়েদের বিয়ের সময়ের রূপশ্রী প্রকল্পেও ২৫ হাজার টাকা পায়। সুতরাং  বাবা মায়ের চিন্তার প্রয়োজন নেই। মেয়েরা যেমন সংসার চালায়, মেয়েরা দেশ চালায়, প্লেন চালায়, সারা বিশ্ব চালায়, পারে না বলে কোনও কথা মেয়েদের অভিধানে নেই।' মেয়েদের কোন বয়সে, কোন কোন প্রকল্প রাজ্য সরকার দিয়ে থাকে, সবুজ সাথী থেকে তরুণের স্বপ্ন, নানা প্রকল্পের উল্লেখ করেন তিনি। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে বার্তা দেন, মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাওয়ার।
  • Link to this news (আজকাল)