বসিরহাট সীমান্তে জৌলুসহীন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন, ভারত-বাংলাদেশের সৌভ্রাতৃত্বে কি টান!
প্রতিদিন | ১৬ আগস্ট ২০২৫
গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: ভারত-বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ‘সীমান্ত মৈত্রী’ সম্পর্কে ছেদ পড়তে চলছে! চিরাচরিত প্রথা মেনে এবছর হল না দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মিষ্টি বিনিময়। সীমান্তের জিরো এরিয়ায় হয়নি প্রশাসনিক আধিকারিকদের ফ্ল্যাগ মিটিংও। অনেকটা জৌলুস হারিয়ে ফিকে এবছর বসিরহাট সীমান্তে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে দুই দেশের সৌভ্রাতৃত্ব!
এপার বাংলার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র মিষ্টি ওপার বাংলায় গেলেও জানতে পারল না কেউই। এল ওপাড় বাংলার মিষ্টিও। তবে অন্যান্য বছরের মতো জাঁকজমক করে নয়। প্রতি বছর যেমন দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সৌভ্রাতৃত্ব বিনিময় দেখা যায়, এবার তা দেখা গেল না। হল না সেভাবে মিষ্টিমুখ। কোলাকুলিও। এবারের স্বাধীনতা দিবসে সীমান্তের ‘জিরো এরিয়ায় চেনা ছবিটা যেন পালটে গেল!
গুটিকয়েক আধিকারিকদের নিয়ে ‘নামকাওয়াস্তে’ মিষ্টির প্যাকেট আধান-প্রদান হল ‘কাস্টমস’ ও ‘ইমিগ্রেশনে’র। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, ভারত-বাংলাদেশ, দুই প্রতিবেশী দেশের দীর্ঘদিনের ‘সীমান্ত মৈত্রী’ সম্পর্কে কি ছেদ পড়তে চলেছে! যদিও এনিয়ে মুখ খোলেনি কোনও প্রশাসনিক আধিকারিকই।
বছর দেড়েক আগে কোটা আন্দোলনে জেরবার হয় বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান শেখ হাসিনা। সেই সময় ছাত্রদের আন্দোলন থেকে উঠে এসেছিল একাধিক ভারত বিরোধী স্লোগানও। কিন্তু তাতেও ভারতবর্ষের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে তার কোনও আঁচই পড়েনি। তবে প্রথা মেনে সাতক্ষীরা-ভোমরা সীমান্তের শূন্য রেখায় ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সেই চেনা ছবি দেখা গেল না।
ওয়াকিবহল মহলের মতে, একদিকে অবৈধ অনুপ্রবেশ, জঙ্গি হামলা এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন স্থায়ী সরকার না থাকা বাংলাদেশে একাধিক নীতি, দুই দেশের বন্ধুত্বে প্রভাব ফেলেছে।
তবে এবছর দুই দেশের কাস্টমস (শুল্কদপ্তর) ও ইমিগ্রেশনের কর্তা ব্যক্তিরা মিষ্টি-ফুল নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। একে অপরের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তাতে উপস্থিত ছিলেন না দুই দেশের স্থলবন্দরের ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএনএফ) অর্থাৎ ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যরা। এদিন এপার বাংলার ঘোজাডাঙার ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যেই থেকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেন। উপস্থিত ছিলেন, ঘোজাডাঙা ফরওয়ার্ডিং ক্লিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জীব মণ্ডল সভাপতি ভোলা ঘোষ-সহ অন্যান্যরা। সীমান্তের বাচ্চাদের চকলেট-মিষ্টি বিতরণ করা হয় সিএনএফয়ের তরফে।