• ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬, সমীক্ষার কাজ শুরুই করতে পারেনি কৃষ্ণনগর পুরসভা
    বর্তমান | ১৬ আগস্ট ২০২৫
  • অগ্নিভ ভৌমিক, কৃষ্ণনগর: ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬ জন। যা এবছর নদীয়া জেলার পুরসভাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা।‌ অথচ রাজ্যের মধ্যে একমাত্র কৃষ্ণনগর পুরসভাতেই বন্ধ রয়েছে ডেঙ্গু সমীক্ষার কাজ। বিগত তিন মাস ধরে রাজ্যজুড়ে পুরসভাগুলিতে এই কাজ চলছে। কিন্তু সেখানে এবছর সমীক্ষার কাজ শুরুই করতে পারেনি কৃষ্ণনগর পুরসভা। জানা গিয়েছে, কাউন্সিলারদের মধ্যে অনেকেই নিজের ওয়ার্ডে নতুন সমীক্ষকদের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। এই পরিবর্তনের কারণ জানতে চায় স্বাস্থ্যদপ্তর। আবার অনেক কাউন্সিলার সমীক্ষকদের নাম তালিকাই দেননি। যার ফলে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু যায়নি। এমনিতেই দীর্ঘ সাত মাস ধরে কৃষ্ণনগর পুরসভার অচলাবস্থা চলছে। বর্তমানে পুরসভার চেয়ারপার্সন রীতা দাসকে অপসারণের কারণে, পুরবোর্ড ভেঙে গিয়েছে। তাই   কবে সেই সমীক্ষার চলতি বছরে আদৌও শুরু হবে কিনা সেই নিয়ে সংশয় রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, পুরসভার কাউন্সিলারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও মনোমালিন্যের কারণেই এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।‌ কৃষ্ণনগর পুরসভার অপসারিত চেয়ারপার্সন রীতা দাস বলেন, নানা সমস্যার কারণে এবার ডেঙ্গুর সমীক্ষার কাজ করা যায়নি। তিন মাস ধরেই সেই কাজ বন্ধ আছে। মূলত জুন মাস থেকে ডেঙ্গুর সমীক্ষার কাজ শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায়।‌ সমীক্ষার দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে, মশার প্রজনন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে এবং রোগের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। সেইসঙ্গে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ডেঙ্গু রোগ এবং এর প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে। পুরসভার তরফ থেকে ওয়ার্ড ভিত্তিক সেই দল তৈরি করা হয়। তাদের উপরে থাকেন একজন সুপারভাইজার। কোথাও জঙ্গল থাকলে বা নোংরা জমে থাকলে, সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার জঞ্জাল সাফাই বিভাগকে জানায় ওই টিম। সাফাইকর্মীরা তা গিয়ে পরিস্কার করে দেন। যা শহরকে ডেঙ্গু মুক্ত করার জন্য অন্যতম কর্মসূচি। কিন্তু এবছর এখনো পর্যন্ত সেই কাজ শুরু করতে পারেনি কৃষ্ণনগর পুরসভা। যদিও ওয়ার্ডভিত্তিক সমীক্ষার দল তৈরি করা হয়েছিল। যেমন, ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৮টি করে দল এবং ৩ জন সুপারভাইজার দেওয়া হয়েছিল। ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১১টি দল এবং ২ জন সুপারভাইজার, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৮টি দল এবং ২ জন সুপারভাইজার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড ১২ টি দল এবং ৩ জন সুপারভাইজার, এরকম বিভিন্ন ওয়ার্ডে সমীক্ষার দলের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সবমিলিয়ে মোট ২০০ জনের দল বানানো‌ হয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি।‌ কিন্তু সমীক্ষার দলের সংখ্যায় অসম বন্টন দেখা যায়। তা নিয়ে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলার আপত্তি জানায়।‌ শহরবাসীর কথায়, এমনিতেই বোর্ড না থাকার জন্য শহরের আবর্জনা পরিস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে শহরজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনার স্তূপকারে জমা থাকছে। তারউপর বৃষ্টির ফলে আবর্জনার মধ্যেই জল জমে থাকছে। সেই জমা জলে মশার লার্ভা বংশবিস্তার করছে। কৃষ্ণনগর পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলার বর্ণালী গুইন দত্ত বলেন, শহরে দীর্ঘদিন হলো ডেঙ্গুর কাজ হচ্ছে না। যার ফলে শহরজুড়েই ডেঙ্গু বিস্তার নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)