• এবার মাছ চাষের জলাভূমির 'ই-অকশান' করবে রাজ্য, সংশোধনী ম্যানুয়ালে ছাড়পত্র মন্ত্রিসভার
    বর্তমান | ১৬ আগস্ট ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: পাঁচ একরের বড় সরকারি বা খাস জলাভূমি মাছ চাষের জন্য এবার থেকে ই-অকশানের পথে হাঁটছে রাজ্য। অর্থাৎ, আগের প্রথা অনুযায়ী দরপত্র ডাকা ছাড়াও অনালাইনে নিলামের ব্যবস্থাও চালু করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফে। সোমবার ৫ একরের বেশি আয়তনের খাস জলাশয় সম্পর্কিত ১৯৯১ সালের পশ্চিমবঙ্গ ভূমি ও ভূমি সংস্কার ম্যানুয়াল সংশোধনের ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। এর জেরে পশ্চিমবঙ্গে মৎস্য চাষে ব্যাপক উন্নতি সুনিশ্চিত করা যাবে বলেই প্রশাসনিক মহলের মত। কারণ, এর জেরে ৫ একরের বেশি জলাশয়ে যেখানে মৎস্য চাষ করা যাবে সেই সংক্রান্ত একাধিক সংশোধনী নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে রাজ্যে মাছের উৎপাদন আরও বাড়বে বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের। এই সমস্ত জলাশয় ব্যবহার করে রাজ্যে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য একাধিক মন্ত্রী কে নিয়ে একটি 'কমিটি অব মিনিস্টার্স' গড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই কমিটির জমা দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতেই এই সংশোধনী আনা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ একরের নিচের জলাভূমি যেখানে মাছ চাষ হয় তা দশকের পর দশক ধরে রয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তরের বা জেলায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার অধীনে। তবে ৫ একর এর বেশি আয়তনের জলাশয়ের নিয়ন্ত্রণ মূলত ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের অধীনে। ফলে ম্যানুয়ালের সংশোধনী কার্যকর হবে শুধুমাত্র পাঁচ একরের বেশি জলাভূমির ক্ষেত্রেই। যার দরপত্র ডাকার দায়িত্ব থাকে মূলত জেলাশাসকের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটির উপরে। এতদিন এই কমিটিতে জেলাশাসক, ভূমি দপ্তরের আধিকারিক, এসডিও এবং মৎস্য দপ্তরের একজন আধিকারিক থাকতেন। এই সংশোধনী আসার ফলে এবার থেকে ক্ষুদ্র সেজ দপ্তরের ও একজন করে আধিকারিক থাকবেন এই কমিটিতে। কারণ অনেক খালও মৎস্য চাষের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই ম্যানুয়াল এ সংশোধন নিয়ে আসার ফলে এবার থেকে অনলাইনে অকশানের ব্যবস্থা চালু করা হবে। এর জন্য একটি পৃথক পোর্টালও তৈরি হবে। যার দায়িত্ব মৎস্য দপ্তরের হাতে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে রাজ্যের রাজস্বও বৃদ্ধি হবে বলেও নিশ্চিত অভিজ্ঞ আমলারা।মত অনেক সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই সংশোধনী আসার ফলে জলাভূমি লিজ দেওয়ার অঙ্ক বছরে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে তার দরপত্র বা অকশান করতে পারবে জেলা স্তরের কমিটিই। এর আগে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত এই দায়িত্ব ছিল জেলা কমিটির। তার থেকে বেশি হলে সিদ্ধান্ত নিত রাজ্য। আগে দরপত্র ডাকা হলে প্রথম বারে শুধু মাত্র ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটি, ফিস প্রোডাকশন গ্রুপ এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীরা অংশ নিতে পারতেন। দ্বিতীয়বার দরপত্র ডাকার প্রয়োজন হলে তবেই মৎস্য চাষের সঙ্গে যুক্ত থাকা কোনও শিল্পোদগী এবং ব্যক্তিগত ভাবে মানুষ অংশ নিতে পারতেন। এবার থেকে প্রথমবারেই মৎস্য চাষের সঙ্গে যুক্ত থাকা কোনও শিল্পোদগীরাও অংশ নিতে পারবেন। তাতে যাতে এলাকাভিত্তিক ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটি, ফিস প্রোডাকশন গ্রুপ এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীরা যাতে স্বার্থ বিঘ্নিত না হয়, তার জন্য তাঁদের বিশেষ ছাড় দেবে রাজ্য।
  • Link to this news (বর্তমান)